ঢাকা, বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫

১৫ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৪ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
সাইবার হামলার শঙ্কা: সতর্কতা জারি করল বাংলাদেশ ব্যাংক
Scroll
৩৯ আসনের সীমানায় পরিবর্তন: গাজীপুরে বেড়েছে, বাগেরহাটে কমেছে
Scroll
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধ: দণ্ডাদেশের রায় বাতিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক খালাস
Scroll
সিলেটে স্কুলছাত্র সুমেল হত্যা মামলায় আটজনের মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
Scroll
রংপুরে গঙ্গাচড়ায় হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় পাঁচজন গ্রেপ্তার
Scroll
রায় জালিয়াতির মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত
Scroll
রাজধানীর গুলশানে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে গ্রেপ্তার রিয়াদের বাসা থেকে সোয়া দুই কোটি টাকার চেক উদ্ধার
Scroll
রাশিয়ায় আট দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত, সুনামির সতর্কতা
Scroll
সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিবে যুক্তরাজ্য; কিছু শর্ত জুড়ে দিয়ে কিয়ার স্টারমারের ঘোষণা
Scroll
উরুগুয়েকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল নারী দল

মানুষের প্রয়োজনে না এলে সংস্কার কাজে আসবে না: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪:৪৪, ২৯ জুলাই ২০২৫

মানুষের প্রয়োজনে না এলে সংস্কার কাজে আসবে না: মির্জা ফখরুল

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম যদি মানুষের প্রয়োজনে না আসে, শিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে না পারে, শিশুদের জন্য নিরাপদ জীবন গড়ে দিতে না পারে, তাহলে সে সংস্কার কোনো কাজে আসবে না।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ মাঠে ‘গণতান্ত্রিক পদযাত্রায় শিশু’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

আমরা বিএনপি পরিবার আর মায়ের ডাক যৌথভাবে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করে। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে গুমের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তি ও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ হওয়া শিশুদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা আশা করেছিলাম, পরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার শিশুদের (গুমের শিকার ব্যক্তিদের সন্তান) পুনর্বাসনের জন্য একটি স্পেশাল সেল গঠন করবে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, কাজটি হয়নি। আশা করব, দেরিতে হলেও অন্তর্বর্তী সরকার তাদের জন্য কিছু করবে।

অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত গুম কমিশনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, একটি কমিশন করা হয়েছে। এই কমিশন এখন পর্যন্ত একটা রিপোর্ট নাকি করেছে। কিন্তু তাদের এই যে খোঁজ করা, এ বিষয়ে খুব বেশি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে হয় না।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের নিয়ে আয়োজিত কোনো অনুষ্ঠানে এলে ‘ভারাক্রান্ত হন’ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ পরিবারগুলো যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, আমরা কিন্তু সেই ত্যাগ অনেকেই করতে পারিনি। যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে শিশুদের বলতে শুনি যে আমি আমার বাবাকে দেখতে চাই, বাবার হাত ধরে স্কুলে যেতে চাই, ঈদের মাঠে নামাজ পড়তে যেতে চাই, তখন আমি আমার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না।

পটপরিবর্তনের পর শিশুদের জন্য তেমন কিছু করা হয়নি উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা অনেকেই বড় বড় পদে বসে গেছি। অনেকে মন্ত্রী হয়েছি, বড় কর্মকর্তা হয়েছি, অনেকে বড় বড় ব্যবসা নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এই শিশুদের কথা ঠিক সেইভাবে সামনের দিকে আনতে পারিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি এটুকু কথা দিতে পারি, জনগণের ভোটে যদি আগামী নির্বাচনে আমরা সরকার গঠন করি, তাহলে আমাদের নেতা তারেক রহমান কথা দিয়েছেন, এই শিশুদের পুনর্বাসনের কাজ করবেন, আমরা সেই কথাটি আবারো উচ্চারণ করতে চাই।

অনুষ্ঠানে অংশ নেন গুমের শিকার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী ও দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসিনা রুশদী। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে শিশুদের বাইরে রাখা হয় বলে আমরা জানি। কিন্তু গত ফ্যাসিস্ট আমলে গুম হওয়া পরিবারের শিশুরা অসহ্য মানসিক যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে গেছে। তাদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।’

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে রাজধানীর উত্তরায় শহীদ শিশু জাবির ইব্রাহিমের বাবা কবির হোসেন বলেন, ‘জুলাই–আগস্টে ১৪১ শিশু মারা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার এসব শিশুর জন্য কিছু করেনি। আমি চাই, সারা দেশ শহীদ শিশুদের চিনুক।’

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গুমের শিকার নুর হোসেনের মেয়ে নাবিলা নুর বলেন, যারা জুলাইয়ে আন্দোলন করেছে, তাদের আন্দোলন স্বার্থক। কারণ, হাসিনা এখন দেশে নেই। কিন্তু আমাদের আন্দোলন এখনো শেষ হয়নি। আমি বাবাকে পাইনি। বাবাকে গুম করার একটাই কারণ ছিল, তিনি বিএনপি করতেন।

শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গুমের শিকার কায়সার হোসেনের মেয়ে লামিয়া আক্তার বলেন, ১২ বছর হলো আমি বাবাকে দেখি না। বাবাকে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি একটু পানি চেয়েছিলেন, সেটিও দেওয়া হয়নি। আমরা রাস্তার ধারে ধারে খুঁজছি, ৫ আগস্টের পরও খুঁজছি, কিন্তু কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। আমি আমার বাবাসহ গুমের শিকার সবার খোঁজ চাই।

মায়ের ডাকের সংগঠক সানজিদা ইসলাম বলেন, হাসিনার ফ্যাসিজমের ব্যাপ্তি অনেক বড় ছিল। যারা পিতা-মাতাকে হারিয়েছেন, আমাদের কষ্টের জায়গা এক। তাই আমরা একসঙ্গে হয়েছি।

আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসানসহ গুমের শিকার বিভিন্ন ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন