শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:৩৪, ২ আগস্ট ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার (১ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে। উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের সালমদী বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে ভৈবরদী গ্রামের বাসিন্দা ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুলাল রায়কে একটি হাইয়েস গাড়িতে করে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। তারা নিজেদের ডিবি পুলিশের পরিচয় দেন এবং তুলে নেওয়ার কিছুক্ষণ পর দুলালের মোবাইল ফোন থেকে তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন।
অপহৃত দুলাল রায়ের স্ত্রী ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আড়াইহাজার থানায় যোগাযোগ করেন। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার অভিযানের নির্দেশনা দেন। এরপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মো. সোহেল রানা ও ডিবির ওসি খন্দকার জহির উদ্দিন আহাম্মদের নেতৃত্বে একাধিক টিম অভিযানে নামে।
অপহরণকারীরা একাধিকবার অবস্থান পরিবর্তন করে বিভ্রান্তির চেষ্টা চালালেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে অবস্থান শনাক্ত করা সম্ভব হয়। পুলিশের তৎপরতায় ভীত হয়ে শনিবার (২ আগস্ট) ভোর ৫টার দিকে দুলাল রায়কে রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা এলাকায় ফেলে রেখে পালিয়ে যান অপহরণকারীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
আড়াইহাজার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি হাসান জানান, ‘অপহরণকারীরা যে মোবাইল ফোন থেকে দুলালের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল, সেটি বন্ধ না করায় প্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। আমরা এখন অপহরণকারীদের চিহ্নিত করার কাজ করছি।’
অপহরণকারীদের ব্যবহৃত গাড়ি ও সিমকার্ড সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তাদের অবস্থান ও পরিচয় বের করার কাজ চলমান রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিতভাবে অপহরণের মাধ্যমে অর্থ আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এর আগেও আশপাশের এলাকায় একাধিক সন্দেহজনক ঘটনা ঘটেছে; যা এখন পুনরায় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আড়াইহাজারে এটি প্রথম নয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ছদ্মবেশে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ উঠেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এইসব ‘ছায়া অপরাধী চক্র’ দমনে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সচেতন নাগরিকরা।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী দুলাল রায় বর্তমানে নিরাপদে নিজ বাড়িতে ফিরে গেছেন। পরিবারের সদস্যরা তার নিরাপদ প্রত্যাবর্তনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও ভয় ও উদ্বেগ এখনো কাটেনি।
ঘটনাটি নিয়ে আড়াইহাজার থানা মামলা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্তের জন্য পৃথক টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সূত্র।
এ রিপোর্ট তৈরির সময় পর্যন্ত কোনো অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, অচিরেই এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে