ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৭ আগস্ট ২০২৫

২৩ শ্রাবণ ১৪৩২, ১২ সফর ১৪৪৭

শেখ মুজিবের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

পিরোজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০:২৬, ৫ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১১:৪৮, ৫ আগস্ট ২০২৫

শেখ মুজিবের ছবি টানানো সেই প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত

ছবি: সংগৃহীত

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সোমবার (৪ আগস্ট) এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়টির অফিস কক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন দাবি করেন, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানো কোনো অন্যায় নয় বরং এটি তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের অংশ।

তিনি আরো বলেন, আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোকে আমি গর্বের বিষয় মনে করি।

এ বিষয়ে নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে তদন্ত চলছে। বরখাস্তের সিদ্ধান্তকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। অনেকেই এটিকে স্বাধীন মত প্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ ও রাজনৈতিক প্রভাব বলেও মন্তব্য করছেন। আবার অনেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর বলেও আখ্যায়িত করেছেন ওই প্রধান শিক্ষিকাকে।

এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষক সমাজের একাংশ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে ও অন্য একটি পক্ষ এর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছে।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার স্বামী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে বলেছেন আপনার একটা চিঠি আছে। অফিসে এসে নিয়ে যাবেন। তবে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিষয়ে আমাদের কিছু বলেননি।

নেছারাবাদ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. খোন্দকার জসিম আহমেদ বলেন, বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্কুলে আমরা তদন্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। তদন্ত চলমান আছে, দোষী সাব্যস্ত হলে বিভাগীয় মামলাও হতে পারে। এমনকি স্থায়ীভাবে বহিষ্কারও হতে পারেন।

গত ৩ আগস্ট উপজেলার সোনারঘোপ রমেশচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শামীমা ইয়াছমিন বিদ্যালয়ের দেয়ালে বঙ্গবন্ধুর ছবি টানানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে উপজেলাব্যাপী উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার বিরোধিতা করলে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে। দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে আমার পিতা মইনউদ্দীন মাস্টার মুক্তিযুদ্ধে করেছেন। সেই যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধু না হলে স্বাধীন বাংলাদেশের সৃষ্টি হত না। তাই আমার বিদ্যালয় থেকে এই ছবি সরাতে পারবো না। পরে অবশ্য শিক্ষা কর্মকর্তার ফোন পেয়ে ছবি সরান তিনি।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন