ঢাকা, শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

২৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ সফর ১৪৪৭

রাঙামাটিতে ২০ ইউনিয়নে পানিবন্দী ১৮ হাজার মানুষ

রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮:৪১, ৮ আগস্ট ২০২৫

রাঙামাটিতে ২০ ইউনিয়নে পানিবন্দী ১৮ হাজার মানুষ

ছবি: ঢকা এক্সপ্রেস

টানা গত এক সপ্তাহ ধরে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে হ্রদে পানি বৃদ্ধিতে রাঙামাটি জেলার ১৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন। জেলার বাঘাইছড়ি, লংগদু, বরকল, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি ও সদর উপজেলার ছয়টি উপজেলা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন নদীতেও পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলায় দুটি পৌরসভা সহ ২০ ইউনিয়নের ৮১টি গ্রাম, ৫ হাজার ৭০০ পরিবারের ১৮ হাজার ১৪৭ জন মানুষ বন্যাকবলিত রয়েছে। জেলায় বন্যায় ৫৪৮টি ঘর, ৬১টি সড়ক, দুটি ব্রিজ কালভার্ট, ৯৮ একর ফসলি জমি, ৪৩টি মৎস্য খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় ২৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলায় ১২টি আশ্রয় কেন্দ্রে ৯৩৫ জন আশ্রয় নিয়েছেন।

অপরদিকে জেলার বাঘাইছড়ি পৌরসভার ও আটটি ইউনিয়নের পানি কিছুটা কমতে শুরু করলেও লংগদু উপজেলার যোগাযোগ অচল হয়ে পড়েছে। রাঙামাটি সদরের আসামবস্তি, ব্রাহ্মণটিলা, শান্তি নগর সহ বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে।

দুর্গতরা জানান, পানি বৃদ্ধির কারণে রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিতে শুরু করেছে। দ্রুত কাপ্তাই হ্রদের পানি কমিয়ে দেওয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা। বাঘাইছড়ির বাসিন্দা নূর আলম জানান, বাঘাইছড়িতে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত থেকে বাসা বাড়ি থেকে পানি কমতে শুরু করেছে, তবে এখনো অনেক সড়ক ডুবে আছে। বৃষ্টি না কমলে পানি সরতে সময় লাগবে। মুলত উজান থেকে নেমে আসার পানির কারণে পানি কমতে সময় লাগছে। রাঙামাটি শহরের শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা মো. ইউসুফ আলী জানান, শুনেছি কাপ্তাই বাঁধ খুলে দিয়েছে, কিন্তু কোনভাবেই বাসা থেকে পানি কমছে না। আরো দিন দিন পানি বাড়ছে। বাচ্চা নিয়ে খাওয়া-দাওয়া খুব সমস্যা হচ্ছে।

রাঙামাটি শহরের আসামবস্তি এলাকার বাসিন্দা মো. তুহিন বলেন, সরকার ত্রাণ না দিয়ে দ্রুত পানি কমানোর ব্যবস্থা নিলে স্থানীয়রা সুবিধা পাবে। পানির কারণে বাচ্চাদের স্কুল-কলেজে যাওয়া কঠিন হয়ে গেছে।

রাঙামাটি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রুহুল আমিন বলেন, জেলায় ২৪৬ টি আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত খোলা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্গতদের জন্য ১ হাজার শুকনো প্যাকেট এবং ২ হাজার কেজি চাল বিতরণ করা হয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০৮.৮৪ এমএসএলে পৌঁছানোর পর প্রকল্প কর্তৃপক্ষ বাঁধের ১৬টি গেট সাড়ে তিন ফুট উচ্চতায় খুলে দেয়, এতে প্রতি সেকেন্ডে ৬৮ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে আরো ৩২ হাজারসহ মোট ১ লাখ কিউসেক পানি কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। এতে পানি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কাপ্তাই হ্রদের শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত পানির স্তর রেকর্ড করা হয়েছে ১০৮.৭০ এমএসএল।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

আরও পড়ুন