ঢাকা, শুক্রবার, ০৮ আগস্ট ২০২৫

২৪ শ্রাবণ ১৪৩২, ১৩ সফর ১৪৪৭

কলকাতায় গোপন অফিস থেকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:০৫, ৮ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৭:০৭, ৮ আগস্ট ২০২৫

কলকাতায় গোপন অফিস থেকে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক তৎপরতা

আওয়ামী লীগের লোগো

ভারতের কলকাতার উপকণ্ঠের এক বাণিজ্যিক ভবনের অষ্টম তলায় গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অঘোষিত ‘পার্টি অফিস’। এখানে নিয়মিত বৈঠক করছেন দলটির শীর্ষ ও মধ্যম পর্যায়ের বেশ কিছু নেতা, যারা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন।

বিবিসির অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর আওয়ামী লীগের বহু নেতা ভারতে আশ্রয় নেন। শুরুতে তারা বিভিন্ন নেতার বাসায় সীমিত পরিসরে বৈঠক করলেও পরে স্থায়ী একটি জায়গার প্রয়োজন দেখা দেয়। তখনই ভাড়া নেওয়া হয় এই ছোট অফিসঘরটি। এখানে প্রায় ৩০-৩৫ জন নেতা একসঙ্গে বৈঠক করেন, আর বড় সভাগুলো হয় ভাড়া করা রেস্তোরাঁ বা ব্যাংকোয়েট হলে।

অফিসটির বাহ্যিক কোনো পরিচয় নেই—না সাইনবোর্ড, না শেখ হাসিনা বা বঙ্গবন্ধুর ছবি। এক নেতা জানান, উদ্দেশ্য ছিল জায়গাটির পরিচিতি বাইরের কাছে গোপন রাখা।

কলকাতার এই অফিসে নিয়মিত আসেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। কেউ বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবার সহ আছেন, কেউ কয়েকজন মিলে ফ্ল্যাট শেয়ার করছেন। বিবিসির তথ্যমতে, অন্তত ৮০ জন সাবেক ও বর্তমান এমপি এবং প্রায় ২০০ জন নেতা এখন কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছেন।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে প্রয়োজন অর্থ। এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিবিসিকে বলেন, ‘অগাস্টের পর যে অন্ধকার নেমেছে তা পেরোনো কঠিন। দেশ-বিদেশে থাকা নেতা-কর্মীরাই সাহায্য করছেন। মনোবলই আমাদের আসল শক্তি।’

অন্যান্য নেতারাও জানান, পরিবারের সদস্যরা ব্যক্তিগত খরচের টাকা পাঠাচ্ছেন, কেউ সঞ্চয়ের ওপর নির্ভর করছেন। সাবেক এমপি পঙ্কজ দেবনাথ বলেন, ‘ঢাকায় গাড়ি ছাড়া চলা যেত না, এখন বাস, ট্রেন, মেট্রো, সহকর্মীর বাইক—সবই ব্যবহার করছি। কয়েকজন মিলে ট্যাক্সি নিলেও ভাড়া ভাগ করে দিচ্ছি।’

ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে দলের কার্যক্রম চালাতে খরচ কম হলেও ব্যক্তিগত জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে গিয়ে অনেকেই আর্থিক চাপে পড়েছেন। তবু রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে সবাই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

কবে এই প্রবাস জীবন শেষ হবে বা কখন দেশে ফেরা সম্ভব হবে—এ বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দিনক্ষণ ঠিক করে লড়াই হয় না, আবার লড়াই ছাড়া উপায়ও নেই।’

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন