শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:২৫, ৫ আগস্ট ২০২৫
ছবি: মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না
মুক্তিজোটের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজামাল আমিরুল স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, জনগণের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়, আয়ুব খান থেকে এরশাদ হয়ে হাসিনা তথা স্বৈর-শাসক মুক্ত হয় কিন্তু যুগে যুগে সমস্ত বৈষম্য আর দূর্নীতির শিকার জনগণই হয়। ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’- অক্ষয় সে দাবির স্মারকে প্রতিষ্ঠিত ৯০ পরবর্তী আজকের ২৪শের বাংলাদেশ। ১৯৭১ এ স্বাধীনতা এসেছে, ৯০ এর পর গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় আমরা এগিয়েছি কিন্তু রাজনৈতিক ‘স্থিতিশীলতা’র ক্ষেত্রে জাতীয় সংকটে দেশাত্ববোধের তাড়না সবাই অনুভব করেছি তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই দেশাত্ববোধের সদিচ্ছা, সততাটুকু শেষ পর্যন্ত বিতর্কিত হয়েছে-স্বচ্ছ ভাবমূর্তি হয়েছে কালিমালিপ্ত। ছাত্র-জনতার ২৪শের গণঅভ্যূত্থান পরবর্তীতেও একই চিত্র ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে।
তাই তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তদানে কেনা এ বিজয় জনগণেরই হতে হবে। স্বার্থান্বেষী মহল যেন কোন ভাবেই একে নিয়ে আর খেলতে না পারে। যে ক্ষমতা মানুষকে দানব করে তোলে; সে ক্ষমতা আমরা আর চাই না। কিন্তু এখনও আমরা রাজনৈতিক ‘স্থিতিশীলতা’র ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক যুগের সেই পেটোয়া আর বিশেষ বাহিনী নির্ভর হয়েই হাঁটছি।
কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই দেশাত্ববোধের সদিচ্ছা, সততাটুকু শেষপর্যন্ত বিতর্কিত হয়েছে-স্বচ্ছ ভাবমূর্তি হয়েছে কালিমালিপ্ত; বিচারপতি সায়েম থেকে ইয়াজউদ্দীন, ফখরুদ্দীন বা জেনারেল মঈন-উ-আহমেদ পর্যন্ত একই ট্রাজেডীর বিভিন্ন প্রকাশ। কারণ রাজনৈতিক সংকটের সমাধান রাজনৈতিক পথ ধরেই হতে হয়। আর তা না হলে সে ব্যর্থতার দায়ভার সমস্ত দেশকেই বইতে হয়। এজন্যেই দেশ যদি সাধু সন্ততে ভরেও যায় আর রাজনীতিটা পঁচে ওঠে তবে নিশ্চিত সে দেশ রসাতলে যাবে, বিপরীতক্রমে দেশ যদি গুন্ডা-বদমাইশে ছেঁয়েও যায় আর রাজনীতিটা যথার্থ থাকে তবে সে দেশ অচিরেই বেঁচে উঠবে। কিন্তু রাজনীতি নিজেই যখন রাজনীতিহীন হয়ে ওঠে তখন দেশটা মগের মুল্লুক হয়ে পড়ে। বর্তমানে আমরা সেটাই দেখছি।
তিনি আরো বলেন, যেমন স্বাধীনতার ইতিহাস একটি দেশের ইতিহাস- কেবল একটি দল বা পক্ষের ইতিহাস হতে পারে না। ঠিক তেমনি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানও কোন একটি দলের হতে পারে না। তাহলে ঐ দলের বিপক্ষে কথা বলা পক্ষান্তরে দেশ বিরোধীতার সমার্থক হয়ে ওঠে- এভাবে বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের কার্যকারিতা যেমন বিগত ১৬ বছর স্থগিত ছিল আগামীতেও তাই হবে। অথচ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার মধ্যেই এভাবেই বারবার একদলীয় শাসনব্যবস্থা জেঁকে বসে। তখন গণতন্ত্র বা নির্বাচন, সংবিধান বা জনগণ সবটাই আমরা দেখেছি একদলীয় ঢক্কা-নিনাদ হয়ে পড়ে। ২৪শের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানও অনেক দলই তাদের নিজেদের বলে অধীভুক্ত করার চেষ্টা করছে। যা বিগতেরই অনুসরণ।
যেহেতু প্রযুক্তিগত উত্তরণ সাযুজ্যতায় সমগ্র পৃথিবীর চেহারাটা আজ মানুষের হাতে হাতে ঘোরে- তাই আগামীর বাংলাদেশ অথবা আধুনিক রাজনীতি আজ অনিবার্য। ‘সঠিকতা’ সর্বদা যুক্তিযুক্ততায় নির্দিষ্ট হয় বলেই আধুনিক রাজনীতি বলতে ‘গণতন্ত্র’কেই বুঝায়। কারণ বিশ্বাসের পথ ধরে ব্যক্তি সম্পর্ক এলেও- যুক্তির পথ ধরে বিশ্বাস ও ঐক্য স্থাপনের নাম গণতান্ত্রিক সহমত বা পরমত সহিষ্ণুতা। নীতি-আদর্শগত দিক থেকে দলগুলোর পরস্পর ভিন্নতা থাকলেও দেশ ও দেশের মানুষের প্রশ্নে সবাই এক এবং অভিন্ন। মুক্তিজোট বিশ্বাস করে যা ‘সঠিক’ তা সবার। অতএব, আমাদের উচ্চারণ ‘যা সঠিক তা প্রতিষ্ঠা পাক, আর যা বেঠিক তা নির্মূল হোক।’
৫২ থেকে ৭১’র তথা ৯০ হয়ে ২৪শের জন আকাঙ্খা তথা মানুষ ও মনুষত্বের মুক্তিতে সত্য, ন্যায় এবং বৈষম্যহীন দুর্ণীতিমুক্ত ও টেকসই অর্থনীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে মুক্তিজোট বিশ্বাসী। আমরা মনে করি সালাম বরকত থেকে---নুর হোসেন তথা আজকের আবু সাঈদ-মুগ্ধ তথা তাদের পূর্ব পুরুষদের হাড়-গোড় ফাঁক-ফোকর গলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে অথবা উত্তর পুরুষ শিয়রে দাঁড়িয়ে এখনও বলে ‘লাব্বাইক’! এই মাটিতেই বেড়ে বলে ওঠা সেই মানুষগুলো নিশ্চয় ২৪শের বর্ষপুর্তীতে আজ বলবে, ‘Hold your tongue, let me love my Country, my Independence and my Democracy’।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে