শিরোনাম
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯:৩৯, ১২ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৪১, ১২ মে ২০২৫
ইউপিডিএফ সংগঠন নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
সোমবার (১২ মে) সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ (পিসিসিপি) রাঙামাটি জেলা শাখা এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে।
রাঙামাটি পৌরসভার সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বনরূপায় সমাবেশে মিলিত হয়। এতে সংগঠনটির কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলো।
সমাবেশে পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সভাপতি মো. আলমগীর হোসেনের সভাপতিত্বে ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের (পিসিএনপি) কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান। এতে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পিসিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, পিসিএনপির রাঙামাটি সাংগঠনিক সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিক, পিসিসিপি রাঙামাটি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, প্রচার সম্পাদক ইসমাইল গাজী, পিসিসিপি লংগদু উপজেলা শাখার সভাপতি মো: সুমন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি যে গভীর সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে, তা আর কোনো অবস্থাতেই অস্বীকার করা সম্ভব নয়। বিশেষত, আলী রিয়াজের নেতৃত্বে গঠিত ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর সঙ্গে আঞ্চলিক সংগঠন ইউপিডিএফের আলোচনার পর, পুরো পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। কমিশন কি সত্যিই জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে, নাকি সন্ত্রাসীদের রাজনৈতিক বৈধতা দিয়ে তাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ করে দেশের নিরাপত্তা ও শান্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করছে।’
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, দেশের ভূ-খণ্ড রক্ষায়, পার্বত্য চট্টগ্রামকে রক্ষায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে, ইউপিডিএফের অবৈধ অস্ত্রধারীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সন্ত্রাসী সংগঠন ইউপিডিএফকে নিষিদ্ধ করা না হলে তিন পার্বত্য জেলার শান্তিকামী মানুষকে নিয়ে পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামকে অচল করে দেওয়া হবে।’
বক্তারা বলেন, ‘ইউপিডিএফ একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে তার শেকড় রয়েছে। অত্যাচার, হত্যাকাণ্ড, অপহরণ ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত সেই দলটিকে এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। দলটির অন্যতম নেতা মাইকেল চাকমা। যার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যাকাণ্ড, মানুষকে অপহরণ করা, চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। এখন সেই সন্ত্রাসীই গণতান্ত্রিক শাসনের কথা বলছেন।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, ‘একত্রীকরণের নাম করে সন্ত্রাসীদের রাজনীতির মঞ্চে আনা, তা কখনোই গণতন্ত্রের পক্ষে উপকারী হবে না। ইউপিডিএফ, মাইকেল চাকমা এবং তাদের মতো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে রাজনৈতিক বৈধতা প্রদান করা, দেশের জন্য একটি বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, এটা নিশ্চিত।
সমাবেশ থেকে পাঁচ দফা দাবি জানান নেতৃবৃন্দ। ১/ ইউপিডিএফ, জেএসএস ও কেএনএফসহ পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। ২/ দেশদ্রোহী মাইকেল চাকমা, সন্ত লারমা, প্রসীত খীসা, প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, দেবাশীষ রায়, ইয়েন ইয়েনসহ পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের সকল গডফাদারদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ৩/ ঐকমত্য কমিশন থেকে ড. ইফতেখারসহ পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগীদেরকে অপসারণ করতে হবে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান বন্ধে নতুন করে বিজিবির বিওপি স্থাপন করতে হবে। ৫/ পাহাড়ি-বাঙালি সম্প্রীতি বজায় রাখতে ১৯০০ সালের শাষনবিধি বাতিল করে বৈষম্যহীন পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ