শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:৪৩, ১২ মে ২০২৫ | আপডেট: ২২:১২, ১২ মে ২০২৫
ইজিবাইক চালকদের হামলায় নগর ভবন এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
গত কয়েকদিনে সিটি কর্পোরেশনের যানজট নিরসন সুপারভাইজার সম্রাটের নেতৃত্বে শহরে প্রবেশমুখ ২নং রেলগেইট এলাকা থেকে প্রায় ৩০টি অবৈধ ইজিবাইক আটক করা হয়। সেই ক্ষোভের কারণে সোমবার ইজিবাইক চালকরা দ্বায়িত্বরত যানজট নিরসন কর্মীদের উপর পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে বলে সম্রাট জানান।
সোমবার দুপুরে অটোরিকশা চালকরা নগর ভবনের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে, তারা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে ব্যাপক হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে তাদের উপরও হামলা করা হয়। হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত দশজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। যাদের মধ্যে সিটি কর্পোরেশনের যানজট নিরসন সুপারভাইজার সম্রাট ইসলাম, যানজট নিরসন কর্মী সিয়াম, প্রিন্স, শাওন, লিটন, পলাশ ও একজন নারী শিক্ষার্থী শিমলাসহ আটজন ও ইজিবাইক চালকদের মধ্যে দুইজন গুরুতর আহত হন। হামলার সময় প্রায় আড়াই ঘণ্টা নগর ভবন অবরুদ্ধ করে রাখেন ইজিবাইক চালক বিক্ষোভকারীরা।
পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর (বিজিবি) একটি টিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে নেয়। ইজিবাইক চালকদের বারবার সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা ব্যহত করে দেয় বিজিবি ও পুলিশের যৌথ বাহিনী। পরে র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের ঘটনাস্থলে আসতে দেখা যায়।
আহতরা জানান, অটোচালকদের হাতে দেশী ধারালো অস্ত্র রামদা, চাপাতি দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হতে দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক নিরব রায়হান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যারা নাসিকের অধীনে কাজ করে তাদের উপর হামলার ঘটনার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পার হলেও প্রশাসন তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে ব্যর্থ হয়। আমরা যখন শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম তখন হাসপাতালের গেইটের সামনে পুনরায় ইজিবাইক চালকরা হামলার জন্য উদ্যত হয়। এ সময় প্রশাসনের সহায়তায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।’
সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এর আগে শহরে অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং সড়কে কৃত্রিম যানজট বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই হামলার ঘটনায় সাধারণ মানুষ ও সিটি কর্পোরেশনের কর্মীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন এই হামলাকে উস্কানিমূলক আখ্যায়িত করে জানান, হামলাকারীরা সন্ত্রাসী কায়দায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্র প্রতিনিধিদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, শহরে অবাধ প্রবেশের দাবিতে এর আগেও অটোরিক্সা চালকরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। যার মধ্যে চাষাড়ায় সড়ক অবরোধ ও নগর ভবন ঘেরাওয়ের মতো ঘটনাও রয়েছে। আজকের এই হামলা সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ