ঢাকা, রোববার, ২২ জুন ২০২৫

৮ আষাঢ় ১৪৩২, ২৫ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, বিশ্ব নেতাদের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬:৩৮, ২২ জুন ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, বিশ্ব নেতাদের উদ্বেগ ও প্রতিক্রিয়া

বিশ্ববাসীকে হতবাক করে শনিবার গভীর রাতে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই বিস্ময়কর পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার অংশ হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত আরও বিস্তৃত ও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। বিশ্বনেতারা ইতোমধ্যে এই পদক্ষেপে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং অনেকেই এর নিন্দা জানিয়েছেন।

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই হামলা এমন এক অঞ্চলে ঘটেছে, যেখানে উত্তেজনা ইতোমধ্যেই চরমে। এটি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি।’ তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “এই সংঘাত দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা সারা বিশ্বের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।”

বিশ্বজুড়ে নেতাদের প্রতিক্রিয়া

যুক্তরাজ্য: প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘ইরানকে কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেওয়া যাবে না। যুক্তরাষ্ট্র এই হুমকি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নিয়েছে।’ তবে তিনি কূটনৈতিক সমাধানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।

অস্ট্রেলিয়া: সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “ইরানের পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি।”

নিউজিল্যান্ড: পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইনস্টন পিটার্স বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা গভীর উদ্বেগজনক। আমরা চাই পরিস্থিতি যাতে আরও না বাড়ে।”

মেক্সিকো ও চিলি: উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ সংলাপের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানিয়েছে। চিলির প্রেসিডেন্ট গাব্রিয়েল বোরিক বলেন, “আমরা শান্তি চাই এবং শান্তি প্রয়োজন।”

ভেনেজুয়েলা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভান গিল একে “অবৈধ, অযৌক্তিক ও বিপজ্জনক আগ্রাসন” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

সৌদি আরব: দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “রিয়াদ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার ঘটনা উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংকট নিরসনে রাজনৈতিক উদ্যোগ জোরদারের আহ্বান জানাচ্ছি।”

ওমান: যেটি এতদিন যুক্তরাষ্ট্র-ইরান আলোচনার মধ্যস্থতাকারী ছিল, হামলাকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে নিন্দা জানিয়েছে।

কাতার ও ইরাক: দুই দেশই একে আঞ্চলিক শান্তির জন্য হুমকি উল্লেখ করে কূটনৈতিক সমাধানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বিশ্ব বিশ্লেষকদের মতে, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘমেয়াদি উত্তেজনা ও প্রতিক্রিয়ার নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে। ইরানের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না এলেও, পাল্টা প্রতিশোধ বা প্রতিরোধের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন