ঢাকা, রোববার, ২২ জুন ২০২৫

৮ আষাঢ় ১৪৩২, ২৫ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা

ইরানকে এখনই শান্তি স্থাপন করতে হবে, জাতির উদ্দেশে ভাষণে ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮:৫৮, ২২ জুন ২০২৫ | আপডেট: ১৩:১২, ২২ জুন ২০২৫

ইরানকে এখনই শান্তি স্থাপন করতে হবে, জাতির উদ্দেশে ভাষণে ট্রাম্প

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইরানকে এখনই শান্তি স্থাপন করতে হবে। যদি দেশটি সেটি না করে, তাহলে ভবিষ্যতে আরো বড় হামলা হবে। ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন বোমারু বিমান হামলা চালানোর পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প এ হুঁশিয়ারি দেন। খবর বিবিসি, রয়টার্স ও আল জাজিরা। 

যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় শনিবার (২১ জুন) রাত ১০টায় [বাংলাদেশ সময় রবিবার (২২ জুন) সকাল ৮টা] হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের ভাষণ মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করে। 

ভাষণে ট্রাম্প বলেন, ‘আজ রাতে, আমি বিশ্বকে জানাতে পারি, ইরানে হামলা ছিল অসাধারণ সামরিক সাফল্য।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘এ হামলার উদ্দেশ্য ইরানের পারমাণবিক সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা শেষ করে দেওয়া। সন্ত্রাসের মদদদাতা বিশ্বের এক নম্বরে থাকা দেশটির পারমাণবিক হুমকি থামিয়ে দেওয়া।’ 

এর আগে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় সফল হামলা হয়েছে বলে স্থানীয় সময় শনিবার দিবাগত রাতে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প জানান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে জানা গেছে, একজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইরানে চালানো এ হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টেলথ বোমারু বিমান অংশ নিয়েছে।

ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমরা ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা— ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে— খুবই সফলভাবে হামলা সম্পন্ন করেছি। সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।’ 

ট্রাম্প একটি ওপেন-সোর্স ইন্টেলিজেন্স একাউন্ট থেকে একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে যে, ‘শক্তিশালীভাবে সুরক্ষিত ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা শেষ হয়ে গেছে।’ 

ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘এটি (ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও পুরো বিশ্বের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।’

ইরানের পক্ষ থেকে দেশটির ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার কথা আগেই নিশ্চিত করা হয়েছিল। এবার ইরান জানিয়েছে, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানেও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা হয়েছে।

ইস্পাহানের নিরাপত্তাবিষয়ক ডেপুটি গভর্নর আকবর সালেহি বলেন, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আমরা এ দুটি শহরে পারমাণবিক স্থাপনার কাছে হামলা হতে দেখেছি।

ইরানের আধা সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিমের খবরে বলা হয়েছে, কোম প্রদেশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার একটি অংশে বিমান হামলা হয়েছে।

কোমের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সদর দপ্তরের মুখপাত্র মোরতজা হায়দারিকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘কয়েক ঘণ্টা আগে, কোমের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহিংস লক্ষ্যবস্তুগুলো শনাক্ত করেছে। ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার একটি অংশ শত্রুদের বিমান হামলার শিকার হয়েছে।’ 

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ইরানের পাল্টা হামলার আশঙ্কায় বড় জমায়েত, জনগণের চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জমায়েত, কর্মক্ষেত্রে, গুরুত্বপূর্ণ ভবনে এসব বিধিনিষেধ থাকবে। এক বিবৃতিতে আইডিএফ এসব বিধিনিষেধের কথা জানিয়েছে।

অন্যদিকে ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার কথা বলছে, আদতে সেখানে তেজস্ক্রিয়তা সৃষ্টি করার মতো কোনো পদার্থ নেই।

ওই কর্মকর্তার মন্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, ইরানি কর্তৃপক্ষ বোমা হামলার আগেই হয়তো ওই স্থাপনাগুলো থেকে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম বা তেজস্ক্রিয় উপাদান সরিয়ে ফেলেছিল।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন