শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:১৩, ৩ জুলাই ২০২৫
শুধু বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) একদিনেই প্রাণ হারিয়েছেন ৭৩ জন। নিহতদের মধ্যে ৩৩ জন ছিলেন বিতর্কিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ সংগ্রহ করতে আসা ফিলিস্তিনি। জিএইচএফের কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্ক থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সরাসরি সহায়তায় সংস্থাটি গাজায় ত্রাণ বিতরণ করছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যে দেখা গেছে, শুধু ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রই নয়, গাজাজুড়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, শরণার্থীশিবির, এমনকি স্কুলেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনারা। আল-মাওয়াসির শরণার্থীশিবিরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের অস্থায়ী তাবুতে হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। একইদিনে মোস্তাফা হাফেজ স্কুলে চালানো বোমা হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১১ জন।
দেইর আল-বালাহ শহর থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজজুম জানিয়েছেন, খাদ্য সংগ্রহ করতে আসা সাধারণ মানুষের ওপর নতুন করে গুলিবর্ষণ শুরু করেছে জিএইচএফের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মার্কিন ঠিকাদাররা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর বরাতে জানা যায়, এসব নিরাপত্তাকর্মীরা শুধু ভারী অস্ত্রেই সজ্জিত নন, তারা পাচ্ছেন অবাধ স্বাধীনতা। তাদের মধ্যে অনেকে প্রশিক্ষণহীন, যাচাই-বাছাই ছাড়াই নিয়োগপ্রাপ্ত, এমন তথ্য দিয়েছেন জিএইচএফের দুই মার্কিন সাব-কন্ট্রাক্টর।
অবশেষে, মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিক্রিয়াও এসেছে। অক্সফাম, সেভ দ্য চিলড্রেন, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ ১৩০টির বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে জিএইচএফের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই সংস্থার মাধ্যমে গাজায় মানবিক সহায়তার আড়ালে ‘ক্ষুধাকে অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তাদের অভিযোগ অনুযায়ী, গত মে মাসে জিএইচএফের কার্যক্রম শুরুর পর থেকে শুধু ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০০-র বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন প্রায় ৪ হাজার জন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত ৫৬ হাজার ৬৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা পেরিয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার। যুদ্ধবিরতির আলোচনা যেখানে চলছে, সেখানে বাস্তবতা যেন তার একেবারে বিপরীত চিত্র তুলে ধরছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ