ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা মামলার রায় আজ
Scroll
বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কমান্ডারসহ দুই সদস্য নিহত
Scroll
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
Scroll
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে
Scroll
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে আরো ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
Scroll
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
Scroll
পদত্যাগপত্র জমা দিলেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা পরিচালক চিত্রশিল্পী ও শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান
Scroll
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ৬৫ যাত্রী নিয়ে ফেরিডুবি, নিখোঁজ ৪৩

ডলারের ১২ টা বাজালেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮:৪৯, ১ জুলাই ২০২৫

ডলারের ১২ টা বাজালেন ট্রাম্প

চলতি ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে মার্কিন ডলার বিশ্ববাজারে ১০ শতাংশের বেশি মান হারিয়েছে—যা ১৯৭৩ সালের পর সবচেয়ে বড় পতন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর মুদ্রার বিপরীতে ডলারের এমন দুর্বলতা বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণমান পরিত্যাগ করার পর প্রথমবারের মতো ডলারের বড় পতন হয়। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক শুল্কনীতি, মূল্যস্ফীতি ও সরকারি ঋণের ঊর্ধ্বগতি ডলারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীরা ক্রমেই যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নেতৃত্বের ওপর আস্থা হারাচ্ছেন।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ডলারের দুর্বলতার মূল কারণ ট্রাম্পের আত্মকেন্দ্রিক বাণিজ্যনীতি। ২ এপ্রিল হঠাৎ করে উচ্চ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়ে মার্কিন প্রশাসন বাজারে বিশাল ধাক্কা দেয়। এতে শেয়ারবাজার, বন্ড ও ডলারের মান—সবই নিম্নমুখী হয়। ফেডারেল রিজার্ভের ওপর ট্রাম্পের চাপও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

যদিও ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর বাজারে ইতিবাচক সাড়া দেখা দিয়েছিল, কিন্তু সেই আস্থা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। শুল্ক, ঋণ ও মূল্যস্ফীতির সম্মিলিত প্রভাব ডলারকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে তুলছে।

ডলারের দুর্বলতায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন। অন্যদিকে মার্কিন বিনিয়োগকারীরাও এখন ইউরোপ বা অন্যান্য বাজারের দিকে ঝুঁকছেন। ইউরোস্টক্স ৬০০ সূচক বাড়লেও ডলারে রূপান্তর করলে মুনাফা আরও বেশি হচ্ছে।

শুল্কনীতি ও করছাড়ের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ঘাটতি বাড়ছে। ট্রাম্পের খরচ কমানোর প্রতিশ্রুতি থাকলেও বাস্তবে সরকার ব্যয় আরও বাড়ানোর পথে হাঁটছে। পরবর্তী এক দশকে এই খাতে ট্রিলিয়ন ডলারের ঘাটতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই ঘাটতি পূরণে সরকারকে আরও ঋণ নিতে হবে, অথচ এখনই মার্কিন বন্ড থেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে ডলারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের কারণে অনেক দেশ বিকল্প মুদ্রায় লেনদেন বাড়ানোর পথ নিচ্ছে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে ‘ডিডলারাইজেশন’। যদিও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এটি এখনো পুরোপুরি বাস্তব নয়, তবে এর ইঙ্গিত স্পষ্ট।

বিশ্ববাজারে ক্রমশ বাড়তে থাকা অনিশ্চয়তা ও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নেতৃত্ব নিয়ে সংশয়ে ডলার কীভাবে আগামীর বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজের স্থান ধরে রাখবে, এখন সেটিই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন