ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা মামলার রায় আজ
Scroll
বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কমান্ডারসহ দুই সদস্য নিহত
Scroll
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
Scroll
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে
Scroll
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে আরো ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
Scroll
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
Scroll
পদত্যাগপত্র জমা দিলেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা পরিচালক চিত্রশিল্পী ও শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান
Scroll
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ৬৫ যাত্রী নিয়ে ফেরিডুবি, নিখোঁজ ৪৩

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় একদিনে নিহত ৯৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯:৩২, ১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৩:৪১, ১ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের হামলায় গাজায় একদিনে নিহত ৯৫

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় সাগরপাড়ের একটি ক্যাফেতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই সঙ্গে হামলা করা হয়েছে বিদ্যালয়, হাসপাতাল ও খাবার বিতরণের কেন্দ্রেও। সোমবারের (৩০ জুন) এসব হামলায় অন্তত ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো অনেকে।

শুধু গাজা নগরী ও উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে চালানো হামলাগুলোতে অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় হামলা হয় গাজা নগরীর উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত আল-বাকা ক্যাফেটেরিয়ায়। সাগরপাড়ের এ ক্যাফেতে নিহত হয়েছেন ৩৯ জন। আহত হয়েছেন আরো কয়েক ডজন মানুষ।

ক্যাফেতে হামলায় নিহত ব্যক্তিদের তালিকায় রয়েছেন সাংবাদিক ইসমাইল আবু হাতাবও। সেখানে জড়ো হওয়া নারী ও শিশুদের অনেকের প্রাণ গেছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো উড়ে এসে ক্যাফেটিতে হামলা চালায়। এতে ক্যাফে ধ্বংস হয়ে গেছে। মাটিতে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ইয়াহিয়া শরিফ আল জাজিরাকে বলেন, ‘সেখানে আমরা মানুষদের ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পেয়েছি। এ জায়গা কোনো কিছুর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। না রাজনীতির সঙ্গে, না সামরিকভাবে। তখন ক্যাফেটি জন্মদিনের এক আয়োজনে শিশুসহ সাধারণ মানুষে ভরা ছিল।’

আল জাজিরার হানি মাহমুদ গাজা নগরী থেকে বলেন, পূর্বসতর্কতা ছাড়াই ক্যাফেটিতে হামলা চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।

একই দিন গাজা নগরীর ইয়াফা বিদ্যালয়েও হামলা হয়েছে। বিদ্যালয়টিতে শত শত ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলার আগে বিদ্যালয়টি থেকে পালিয়ে যাওয়া হামাদা আবু জারাদেহ আল জাজিরাকে জানান, উদ্বাস্তুদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত বিদ্যালয়টি খালি করতে মাত্র পাঁচ মিনিট সময় দেওয়া হয়েছিল।

গাজার মধ্যাঞ্চলের দেইর-এল-বালাহ এলাকায় আল-আকসা হাসপাতাল প্রাঙ্গণেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এখানেও হাজারো উদ্বাস্তু ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।

এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের একের পর এক বিমান হামলায় নতুন করে কয়েকশ ফিলিস্তিনি পরিবারের ভিটেছাড়া হওয়ার খবর দিয়েছে বিবিসি। গত মার্চে নতুন করে হামলা শুরুর পর এবার সবচেয়ে বড় এলাকাজুড়ে ঘরবাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেয় নেতানিয়াহুর সরকার।

এ ছাড়া এমন সময় হামলা জোরদার হলো, যখন গাজা নিয়ে একটা যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছাতে নেতানিয়াহুর ওপর চাপ বাড়ছে।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, বিস্ফোরণের ঝলকানির পরেই রাতের আকাশে আগুন ও ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী উপরের দিকে উঠে যাচ্ছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী— আইডিএফ আগেই উত্তর গাজার বড় অংশের বাসিন্দাদের এলাকা ত্যাগ করে দক্ষিণ দিকে আশ্রয় নিতে বলেছিল। তবে সেখানকার অধিকাংশ বাসিন্দা দক্ষিণ দিকে না গিয়ে গাজা শহরের মধ্যেই পশ্চিম দিকে চলে যান।

পরিবারসহ জেইতুন থেকে পালিয়ে এসেছেন সাত সন্তানের মা আবির তালবা। তিনি বলেন, আমাদের আর কোনো উপায় ছিল না, সবকিছু পেছনে ফেলে চলে আসতে হয়েছে। ফোনকলের মাধ্যমে আমরা রেকর্ডিং করা একটি বার্তা পাই, যেখানে বলা ছিল যে আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে আছি এবং অবিলম্বে সরে যেতে হবে।

আবির তালবা বলেন, এ নিয়ে সপ্তমবার পালাতে হলো আমাদের। আবারো আমরা রাস্তায়। আমাদের খাবার নেই, পানি নেই; সন্তানরা না খেয়ে আছে। এর চেয়ে মৃত্যুই এখন সহজ মনে হয়।

ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মধ্যে এ আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে যে, সেখানকার বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার নির্দেশনা ও টানা বিমান হামলা ইসরায়েলের একটি বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। অনেকে মনে করছেন, ইসরায়েল হয়ত গাজায় স্থল অভিযান আরও বিস্তৃত করবে।

তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে এমন কথাও বলা হচ্ছে যে, কিছু জেনারেল মনে করছেন, গাজায় তাদের সামরিক অভিযান লক্ষ্য পূরণের কাছাকাছি পর্যায়ে চলে এসেছে। ইসরায়েলের অনেক সাবেক সেনা কর্মকর্তা মনে করেন, গাজার গেরিলা ধাঁচের যুদ্ধ বেধে গেলে আরো বেশি বেসামরিক মানুষ, বন্দি ও সৈন্য নিহত হবে।

তবে সবার নজর এখন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে, যিনি বরাবরই গাজায় হামলা অব্যাহত রাখার পক্ষে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন