শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:১৪, ২ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:১১, ২ জুলাই ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
নিজের মালিকানাধীন সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, প্রস্তাবিত চুক্তি কার্যকর থাকার সময় যুদ্ধ বন্ধে (স্থায়ীভাবে) আমরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব। তবে চুক্তির শর্তের বিষয়ে ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু জানাননি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার পোস্টে আরো লেখেন, শান্তি প্রতিষ্ঠায় সহায়তায় কাতার ও মিসরবাসী কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তারাই চূড়ান্ত চুক্তির প্রস্তাব দেবেন। আশা করি, হামাস চুক্তিটি গ্রহণ করবে। কারণ, এটি আর ভালো হবে না; বরং এটি শুধু আরো খারাপ হতে পারে (অর্থাৎ এ চুক্তিই হামাসের জন্য সবচেয়ে ভালো সুযোগ। যদি তারা এটি প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো আরো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে)।
এদিকে ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিয়ন সা'র সোমবার বলেন, গাজায় জিম্মি চুক্তি এবং যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর ব্যাপারে ইসরায়েল আন্তরিক। গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সর্বশেষ প্রস্তাবে তেল আবিবের অবস্থানের বিষয়ে তিনি এমন কথা বলেন।
যুদ্ধবিরতি নিয়ে গাজায় নতুন করে আলোচনা শুরুর জন্য উইটকফ শিগগিরই মিশরের কায়রো যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজায় ইসরায়েলের সংঘাত বন্ধ করার এবং জিম্মি চুক্তি নিশ্চিত করার জন্য তেল আবিবকে চাপ দিচ্ছেন।
ফক্স নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান বন্ধ করা ট্রাম্পের আব্রাহাম চুক্তিতে নতুন কিছু দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের সামনে সুযোগ রয়েছে। জেরুজালেম একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি করে। আমরা আমাদের সৈন্য এবং নাগরিকদের রক্ত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন বাস্তবতার জন্য মূল্য দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ইসরায়েল আব্রাহাম চুক্তির শান্তি ও স্বাভাবিকীকরণের বৃত্তকে সম্প্রসারিত করতে আগ্রহী। আমাদের প্রতিবেশী সিরিয়া এবং লেবাননের মতো দেশগুলোকেও শান্তি ও স্বাভাবিকীকরণের বৃত্তে যুক্ত করার আগ্রহ রয়েছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলের অপরিহার্য এবং নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালান ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের যোদ্ধারা। ইসরায়েলের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এতে প্রায় এক হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়। ইসরায়েল থেকে দুই শতাধিক মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নেওয়া হয়।
হামলার জবাবে ওই দিনই অবরুদ্ধ গাজায় তাণ্ডব শুরু করে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। এখন পর্যন্ত চলমান থাকা নির্বিচার ইসরায়েলি হামলায় উপত্যকাটিতে ৫৬ হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যাও লাখ ছাড়িয়েছে। এসব তথ্য হামাসনিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের মঙ্গলবারের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে হামাস যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে নিয়েছে কিনা, সেটি প্রাথমিকভাবে জানা যায়নি। আর ইসরায়েলের তরফেও জানা যায়নি আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া।
আসছে সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগেই ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির শর্ত মানার বিষয়ে নেতানিয়াহুর ইতিবাচক মনোভাবের কথা জানালেন। যদিও ট্রাম্প বলে রেখেছেন, নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি অত্যন্ত দৃঢ় মনোভাব দেখাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, নেতানিয়াহু গাজায় লড়াই বন্ধ করতে চান, এটি তিনি বিশ্বাস করেন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ