শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৫৩, ৩ মে ২০২৫ | আপডেট: ১০:৪৯, ৩ মে ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আদানি গ্রুপ তাদের কয়লার দাম নির্ধারণে আন্তর্জাতিক কয়লা সূচকের গড় মূল্যকে ভিত্তি হিসেবে ধরে। পিডিবির দাবি, এ পদ্ধতিতে দাম তুলনামূলক বেশি হয়। অন্যদিকে, পায়রা ও রামপাল কেন্দ্রের মতো অন্যান্য প্রকল্পে কয়লার উৎস দেশ অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করে বিল দেওয়া হয়। ফলে আদানির দাবি করা বিল এবং পিডিবির অনুমোদিত অর্থের মধ্যে বড় অমিল থেকে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিকবার চিঠি চালাচালি ও আলোচনা হলেও এখনো কোনো চূড়ান্ত সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।
পিডিবির এক কর্মকর্তা জানান, পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র ইন্দোনেশিয়া থেকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কয়লা আমদানি করে, যেখানে দামে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মেলে। রামপাল কেন্দ্রও ছাড়সাপেক্ষে কয়লা কেনে। কিন্তু আদানি তার নিজস্ব খনি থেকে কয়লা সরবরাহ করায় সে সুবিধা নেই। ফলে তাদের সরবরাহকৃত কয়লার দাম তুলনামূলক বেশি পড়ে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, অন্যান্য কেন্দ্র কয়লা আমদানির প্রকৃত খরচ ধরে বিল উপস্থাপন করে। কিন্তু আদানির ক্ষেত্রে চুক্তি অনুযায়ী আন্তর্জাতিক দুইটি সূচকের (যেখানে বিভিন্ন মানের কয়লার দর থাকে) গড় ব্যবহার করে দাম নির্ধারণ করা হয়। এই গড় দরের ভিত্তিতে উচ্চমানের কয়লার মূল্য বিবেচনায় নিয়ে আদানি যে কয়লা সরবরাহ করে, তার দাম নির্ধারণ করা হয়। অথচ ব্যবহারিকভাবে সরবরাহকৃত কয়লার মান অনুযায়ী দাম ধরা হলে প্রতি টনে ২০ থেকে ২৫ ডলার কম পড়ার কথা।
এদিকে, রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে বিলম্বের কারণে আদানির পাওনা একসময় ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এখন নিয়মিত মাসিক বিলের পাশাপাশি বকেয়াও পরিশোধ করছে। ফলে বকেয়ার পরিমাণ কমে বর্তমানে ৯০০ মিলিয়ন ডলার হয়েছে বলে আদানি কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থাটি।
তবে এ তথ্য নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, তাদের হিসাব অনুযায়ী বকেয়ার পরিমাণ ৯০০ মিলিয়ন ডলার নয়। তবে তিনি সুনির্দিষ্ট অঙ্ক জানাননি।
তিনি বলেন, ‘আদানি যেভাবে কয়লার দাম নির্ধারণ করে, তা নিয়ে আমাদের আপত্তি আছে। আমরা সাধারণত উৎস দেশের বাজারমূল্য অনুযায়ী বিল পরিশোধ করি। কিন্তু আদানি আন্তর্জাতিক সূচকের গড় ব্যবহার করে দাম নির্ধারণ করছে। এ কারণে বিলের মধ্যে ফারাক তৈরি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আদানি চিঠি দিয়েছে। খুব শিগগিরই আমরা বৈঠকে বসব। হয়তো একবারেই সমাধান হবে না, তবে আলোচনা চলবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় ১,৪৯৮ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করে আদানি গ্রুপ। একই বছর এই কেন্দ্র থেকে ২৫ বছর মেয়াদে বিদ্যুৎ কিনতে পিডিবির সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ সরকার।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি