ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

স্বৈরাচার পতন দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:৩৪, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ১২:০০, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

স্বৈরাচার পতন দিবস আজ

বাংলাদেশে ৬ ডিসেম্বর দিনটি পালিত হয় স্বৈরাচার পতন দিবস হিসেবে। ১৯৯০ সালের এই দিনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এবং স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গণআন্দোলনের চাপে রাষ্ট্রপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এর ফলে দেশে প্রায় এক দশকের সামরিক ও স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অবসান ঘটে এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন। তিনি প্রথমে সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে এবং পরে ১৯৮৬ সালে একটি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি হন। তবে, তার শাসনামলে ব্যাপক দুর্নীতি, দমননীতি এবং স্বৈরতান্ত্রিক আচরণ জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করে।

১৯৮৭ সাল থেকে এরশাদবিরোধী আন্দোলন জোরদার হতে থাকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র সংগঠন এবং পেশাজীবী সংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে শরিক হয়। বিশেষ করে ১৯৯০ সালে ছাত্রসমাজের নেতৃত্বে গণআন্দোলন চূড়ান্ত রূপ নেয়। ১৯৯০ সালের নভেম্বর মাসে আন্দোলন তীব্রতর হয়।

ঢাকা এবং অন্যান্য বড় শহরগুলোতে লাগাতার হরতাল, বিক্ষোভ এবং অবরোধের ফলে প্রশাসন প্রায় পঙ্গু হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে সেনাবাহিনীর সমর্থন হারিয়ে এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তার পদত্যাগের পর বিচারপতি শাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়, যা পরবর্তীতে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করে।

এদিন তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এ আন্দোলনে প্রাণ হারান নূর হোসেন, সেলিম, দেলোয়ার, তাজুল, ডা.মিলন, নূরুল হুদা, বাবুল, ফাত্তাহসহ অনেকে।

স্বৈরাচার পতন দিবস প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিশেষ করে গণতন্ত্রপন্থী দলগুলো, স্মরণ করে। দিবসটি বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার প্রতীক হিসেবে পালিত হয়। স্বৈরাচার পতন দিবস গণতন্ত্রের প্রতি জনগণের অঙ্গীকার এবং স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে সংগ্রামের একটি স্মারক।

তবে সমসাময়িক সময়ে দেশে গণতান্ত্রিক চর্চা এবং মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষাপটে এ দিবসটি নতুন করে ভাবনারও বিষয় হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন