চোখের জলে শেষ বিদায় মাইলস্টোন শিক্ষার্থী উক্য চিং মারমাকে

চোখের জল ও ভালোবাসায় শেষ বিদায় জানালো মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে নিহত শিক্ষার্থী উক্য চিং মারমাকে। বুধবার দুপুরে ধর্মীয় আচার শেষে বিকালে তার সৎকার সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী রাজস্থলীর বাঙ্গালহালিয়া ইউনিয়নের নিজ গ্রাম খ্যাংদং পাড়ার শ্মশানঘাটে তাকে সমাহিত করা হয়। এ সময় হাজারো মানুষ অশ্রুসিক্ত নয়নে শেষ বিদায় জানায় ছোট্ট উক্য চিংকে।

এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল নয়টায় ঢাকা বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে উক্য চিংয়ের মরদেহ নিয়ে রাঙামাটিতে রওনা দেয় তার পরিবার। সন্ধ্যায় রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙ্গালহালিয়ার কলেজ পাড়া সড়কে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছান। ছোট্ট উক্য চিংয়ের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছুলে আত্মীয় স্বজন, পাড়া প্রতিবেশির কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।

এরপর বুধবার দুপুরে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এ সময় গ্রামের মানুষ ছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই এতে অংশ নেন। পরে উক্য চিংয়ের মরদেহ কাঁধে নিয়ে শ্মশানের দিকে রওনা দেন এলাকাবাসী। এ সময় হাজারো মানুষ উক্য চিংয়ের অন্তিম যাত্রায় অংশ নেন। মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে পাহাড়ের নীরব পরিবেশও ভারী হয়ে উঠছিল বারবার।

উক্য চিং এর পিতা উসাইমং মারমা জানান, আমার ছেলে কখনো আমাদের অবাধ্য হতো না। আমার ছেলেটা খুব মেধাবী ছিল। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল ছেলে। কিন্তু বাবা হয়ে ছেলের জন্য কিছুই করতে পারলাম না। আমি খবর পেয়ে ঢাকাতে গিয়ে তাকে আইসিইউতে দেখতে পেলাম। ছেলের সাথে একদিন আগেও কথা হয়েছিলো। আমি ঢাকায় ছেলের কাছে যাবো বলেছিলাম। ঢাকায় আসলে ছেলেকে যা লাগে সব কিনে দিবো বলেছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস ঢাকাতে গিয়ে ছেলের নিথর মরদেহ নিয়ে আসতে হলো।

এদিকে উক্য চিং এর মা তেজিপ্রু মারমা ছেলের এই মৃত্যু কোনভাবেই মানতে পারছিলো না। ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় অবস্থায় রয়েছেন তিনি। বারবার ছেলের কথা বলে মূর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২১ জুলাই) বেলা ১টায় ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনী একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানেই স্কুলে অবস্থান করছিলো রাঙামাটির ছেলে উক্য চিং মারমা। সে মাইলস্টোন স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র ছিলো।