শিরোনাম
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭:৩৪, ২২ মে ২০২৫ | আপডেট: ০৮:২৭, ২৩ মে ২০২৫
প্রতিপক্ষের হামলায় এভাবে প্রায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
অগ্নিকান্ডের পর ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া, কয়েকদফা বৃষ্টিও হয়েছে। তবুও আগুনের ভয়াবহতা থেকে এখনো ধোয়া বের হচ্ছে।
ফারজানা আক্তার ববি আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে সায়রা ইসলাম ব্রেণ টিউমারে আক্রান্ত। তার চিকিৎসার জন্য ঘরে রাখা পাঁচ লাখ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার ও ১৩টি গরু লুট করে নিয়ে গেছে তারা। এ ছাড়া, ঘরের আসবাপত্রসহ বাড়ির মালামাল ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে। বিছানাপত্র, পোশাকসহ কোনো কিছুই ব্যবহার করার মতো নেই। এদিকে, আমার ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে আপন শেখকে হত্যা করবে বলে হুমকি দিচ্ছে তারা।’
ইতনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পলাশ শেখের স্ত্রী সাবিনা ইসলাম বন্যা বলেন, ‘আমার স্বামী সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় এবং অপরাধমূলক কর্মকান্ডে বাঁধা দেওয়ায় খাজা মোল্যা হত্যা মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। আমাদের ঘরের টিনের চালা কেটে ফেলায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। একটু বৃষ্টি হলে পানি পড়ছে। ঘরের মালামাল লুটপাট ও ভাঙচুর করায় আমাদের অন্যত্র থাকতে হচ্ছে। বইপত্র লন্ডভন্ড করে ফেলায় এবং প্রতিপক্ষের ভয়ভীতিতে ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছে না। আমরা চাই হত্যাকান্ডের বিচার হোক। কিন্তু আমাদের বাড়িঘরে কেনো হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হচ্ছে?’
ক্ষতিগ্রস্থরা জানান, কুমারডাঙ্গা গ্রামের এসকেন্দার শেখের সাথে খাজা মোল্যার ব্যক্তিগত শত্রুতা ও পূর্ববিরোধের জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৪ মে সকাল ৬ টার দিকে কুমারডাঙ্গা বাজারে চায়ের দোকানের সামনে খাজাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
ভুক্তভোগীরা বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে আসামিপক্ষের লোকজন অন্তত ২০টি বাড়িতে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ কারণে পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশু-কিশোররাও বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। দিনের বেলায় নারী ও শিশু-কিশোররা বাড়িতে আসতে পারলেও রাতে ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছেন। অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর করায় ঘরবাড়ি যেমন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, তেমনি প্রতিপক্ষের ভয়ে রাতের বেলায় কেউ বাড়িঘরে থাকতে সাহস পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।’
ক্ষতিগ্রস্থরা আরও জানান, টাকা, স্বর্ণালংকার, গরু-বাঁছুর, হাঁস-মুরগি, ধান-পাটসহ অন্যান্য শস্যাদি লুটপাট করায় এবং বাড়িঘর ভাঙচুরের ফলে প্রায় তিন কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে তাদের।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই আজিজুর তালুকদার জানান, এ হত্যাকান্ডের পর গ্রামটিতে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ৩৬ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।’
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ