শিরোনাম
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:২৯, ২৭ মে ২০২৫
ঘোড়াঘাট পথসভায় বক্তব্য রাখেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
মঙ্গলবার দুপুরে ও বিকেলে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট, হাকিমপুর উপজেলায় পৃথক দু’টি পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এ কথা বলেন।
সারজিস বলেন, ‘নেতা হতে বড় কোনো ডিগ্রি বা সার্টিফিকেট লাগে না। দরকার হয় সাধারণ মানুষের ভাষা বুঝতে এবং শ্রমিকদের দুঃখ কষ্ট বুঝতে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, জুলাই গণঅভ্যুত্থান কেবল একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধেই বিজয় নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণেরও শপথ।’
তিনি বলেন, আগামী দিনে নতুন বাংলাদেশ গড়তে মার্কা দেখে নয়, ভালো মানুষকে সমর্থন দিবেন। কোনো ব্যাক্তি বা দলের অন্ধভক্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আগামী দিনে দেশ ও আপনার এলাকায় কারা নেতৃত্ব দেবে সেই ভালো মানুষকে বেছে নিতে হবে। খারাপ মানুষগুলোকে বর্জন করতে হবে। তাহলে দেখবেন আমাদের নতুন বাংলাদেশ ভালো মানুষের হাতে চলে গেছে। আবার পুনরায় যদি খারাপ মানুষগুলোকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য বেছে নেন তাহলে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের কোনো মূল্য থাকবে না। ভালো মানুষ যে দলের হোক বেচে নিবেন। আপনাদের যদি এনসিপির নেতাদের ভালো মনে হয়, তাহলে এনসিপিকে বেছে নিবেন। আর ভালো না হলে বাদ দিয়ে দিবেন। আমাদের দলের কেউ যদি অন্যায় করে থাকে তাকে মুখের উপর বলে দিবেন। শুধু বলবো ভালো মানুষ চাই, দেশ পরিচালনার জন্য।’
দূর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, ঘুষখোর, দখলদার আছে তাদের নাম পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করার অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতিবাদ, চাঁদাবাজ, ঘুষখোর, দখলদাররা আর মাথ উচু করে আপনাদের সামনে হাঁটতে না পারে। আমরা বিশ্বাস করি, আমরা যদি ভালোর জন্য, ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে কাজ করি তাহলে আগামীর বাংলাদেশ ভালো মানের বাংলাদেশ হবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক রাজনৈতিক দল এক সাথে জেলা উপজেলায় কাজ করবো। আমাদের মধ্যে হবে ভালো কাজের প্রতিযোগিতা। যে ভালো কাজ করে তাকেই জনগণ তাদের প্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিবে। কেউ যদি ভালো কাজ করে, ভালো মানুষ হয় সে যদি আমার দলের নাও হয় আপনি তাকে বেছে নিবেন। কারণ, ভালো মানুষের কাছে যদি ক্ষমতা থাকে সেই ক্ষমতা জনগণের কল্যাণে ব্যবহার হবে। যদি খারাপ মানুষের কাছে ক্ষমতা যায় তাহলে সেই ক্ষমতা এলাকায় এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য ব্যবহার হবে। আর যদি খারাপ মানুষের হাতে মার্কা আর দল দেখে আপনি ক্ষমতা তুলে দেন তাহলে সেই ক্ষমতা মানুষের শোষণ করার জন্য ব্যবহার করবে। সেই ক্ষমতা এলাকায় এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য ব্যবহার করবে। সেই ক্ষমতা আপনার উপরে ক্ষমতার অপব্যবহার হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ বছর উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ’ ডায়লগ দিয়ে হিলি স্থলবন্দরের উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা শোষন করা হয়েছে। আমরা আপনাদের অভাব ও না পাওয়ার কথাগুলো শুনতে এবং সচক্ষে দেখার জন্য জেলায় জেলায় আমাদের এই সফর। হিলি স্থলবন্দরে হাজার হাজার শ্রমিক কাজ করে। শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক পাচ্ছে না কি সিন্ডিকেটের কবলে বন্দী আছে সেগুলো জানার জন্য আমাদের এই সফর। আপনারা আপনাদের জায়গা থেকে হিলি স্থলবন্দর এলাকার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাট, স্টেশনে ট্রেন দাঁড়ানো, হাসাপাতালে চিকিৎসক সংকট ও শ্রমিকরা কোনো সিন্ডিকেটের কবলে জিম্মি আছে কি না লিখিত আকারে উপস্থাপন করুন। আগামী সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দ্বায়িত্ব প্রাপ্তদের সাথে দেখা করে এবং কথা বলে হিলির সকল সমস্যা সমাধান করা হবে।
পৃথক পৃথক পথসভায় বাংলাদেশ নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মূখ্য সংগঠক আলী নাছের খান, যুগ্ম মূখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজিনা দিনা, যুগ্ম মূখ্য সংগঠক আবু সাইদ লিয়ন, গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সংগঠক মেহেরাজ শাহরিয়ার মিথুন, এনসিপির ঘোড়াঘাট উপজেলার সংগঠক আব্দুল মান্নান সরকার, জেলা ও বিভিন্ন উপজেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ