শিরোনাম
রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:০২, ২৯ মে ২০২৫
রাঙামাটির লংগদু-নানিয়ারচর সংযোগ সড়ক দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
লংগদু উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএস মামুনের সভাপতিত্বে ও নুরুল ইসলাম সেলিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন, জামায়াতের আমির মাওলানা নাছির উদ্দিন, মাইনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন কমল, এনসিপির সদস্য পলিন্স চাকমাসহ জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, একটি সড়কের জন্য লংগদু, বাঘাইছড়ির মতো গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। এই দুই উপজেলার মানুষকে নৌ পথে রাঙামাটি যাতায়ত করতে হয়। হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বছরের সাত থেকে আট মাস দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করতে হয়।
নানিয়ারচর থেকে লংগদু মাত্র ১৮ থেকে ২০ কিলোমিটার সড়ক হলে লংগদু ও বাঘাইড়ির মানুষের জেলা শহরের যোগাযোগ সহজ হতো। একই সাথে কৃষি পণ্য, স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন ঘটতো। সরকারের সদিচ্ছার অভাবে এতোদিনেও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি নির্মাণ হয়নি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া শুকতারা বেগম নামে এক নারী বলেছেন, সড়কটির অভাবে আমরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। একজন গর্ভবর্তী মহিলাকে যখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বলে দেয়, এখানে কিছু করার নাই দ্রুত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান, অথচ পানিপথে নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে আমরা রোগী নিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। কিন্তু, এই সড়কটি হয়ে গেলে আমাদের সুবিধামত সময়ে আমরা রোগী নিয়ে জেলা হাসপাতাল কিংবা চট্টগ্রামেও দ্রুত নিয়ে যেতে পারবো। এই একটি সড়কের অভাবে কত গর্ভবর্তী মায়ের মৃত্যু হয়েছে সেটা একমাত্র উপজেলাবাসীই জানে।
মানববন্ধনে এনসিপির সদস্য পলিন্স চাকমা বলেছেন, এই উপজেলার পাহাড়ি-বাঙালি সকলের মানুষ এই সড়কের সুবিধা পাবে। সড়ক ব্যবস্থা না থাকায় শুধু জেলা শহরের সাথে নয় চট্টগ্রাম ও রাজধানীর যোগাযোগও সহজ হবে। সড়ক যোগাযোগ না থাকায় কোন কর্মকর্তা লংগদু উপজেলায় আসতে চান না। ফলে নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষ।
লংগদু উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেছেন, গত ২০ বছর ধরে জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার কাছে এই সড়ক নির্মাণের জন্য অত্র উপজেলার সকলে দাবি করে আসছে। আমাদের প্রাণের দাবি সড়ক পথে রাঙামাটি, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় যোগাযোগ করতে পারবো। একই সাথে এই এলাকায় উৎপাদিত কৃষি পণ্য, উন্নত স্বাস্থ্য সেবার জন্য জেলা সড়ক পথের বিকল্প নাই। এই সড়ক পথ না থাকায় অনেক রোগী পথেই মৃত্যু বরণ করেছে।
তিনি আরো বলেছেন, শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে নৌপথে জেলা শহরের সাথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এই সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই সড়কটি নির্মাণে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
মানববন্ধনের আয়োজক লংগদু উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এবিএস মামুন বলেন, আমরা আগে থেকে এই সড়কের দাবি জানিয়ে আসলেও আমরা জানতাম এটা করা কঠিন ছিল, কিন্তু ২০২০ সালে শতকোটি টাকা ব্যয়ে নানিয়ারচরে সেতু হওয়ার পর আমাদের সড়কটি এখন সহজ হয়ে গেছে। মাত্র ২০-২২ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণ করা হলে আমরা সড়ক পথে সরাসরি জেলা সদরের সাথে যুক্ত হতে পারবো। নাগরিক অধিকার হিসেবে আমরা উপজেলাবাসী অবশ্যই এই সড়কের দাবিদার।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এসইউ