শিরোনাম
কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:৫৭, ১ জুন ২০২৫
ঝড়ে এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বৈদ্যুতিক খুঁটি। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা এখানেই শেষ নয়। দুই শতাধিক স্থানে পোল হেলে গেছে, শতাধিক স্থানে ভেঙেছে ক্রস আর্ম, দেড় শতাধিক ইনসুলেটর এবং ৩ শতাধিক মিটার ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগহীন হয়ে পড়েছে অসংখ্য বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও খামার।
এ অবস্থায় সংকট আরও তীব্র হয়, যখন জানা যায়—প্রতিটি সমিতির প্রায় ৩০ শতাংশ লাইনম্যান ঢাকায় আন্দোলনে অংশ নিতে যাওয়ায় বিপর্যয়ের সময় প্রয়োজনীয় জনবল পাওয়া যাচ্ছে না। মেরামত কাজ চালাতে হচ্ছে বহিরাগত শ্রমিক দিয়ে, যা পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত নয়।
চান্দিনা উপজেলার শ্রীমন্তপুর ও সব্দলপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পর টানা দুই দিন বিদ্যুৎহীন ছিলেন তারা। ততোক্ষণে ফ্রিজের খাবার নষ্ট হয়ে গেছে, মোবাইল ফোন অচল, হ্যাচারির শত শত ডিম নষ্ট—অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন অসংখ্য মানুষ।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সমিতি-১ এলাকায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর মধ্যে চান্দিনা শীর্ষে। সেখানে ৮টি খুঁটি ভেঙেছে, বহু স্থানে তার ছিঁড়েছে। সমিতি-৩ এলাকায় ৪৩টি খুঁটি ভেঙেছে—যা ক্ষতির দিক থেকে সর্বোচ্চ। সমিতি-৪-এ ছিঁড়ে গেছে ১৭৬টি স্থানের বৈদ্যুতিক তার।
এই ভয়াবহ অবস্থায়ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন কুমিল্লা মহানগরীর বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রয়েছে। সেখানে ঘূর্ণিঝড়ের তেমন প্রভাব পড়েনি।
মাঠপর্যায়ে কর্মীর অভাবে অনেক এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। তবে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নিরলসভাবে মেরামত কাজ চলছে এবং দ্রুতই সব এলাকায় বিদ্যুৎ পুনঃস্থাপন সম্ভব হবে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মানবিক সংকটও এই বিপর্যয়ে নতুন করে স্পষ্ট হয়েছে। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি, সুষ্ঠু জনবল ব্যবস্থাপনা এবং দুর্যোগ-পরবর্তী কার্যকর সমন্বয়ের অভাব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, এখনই প্রয়োজন আরও কার্যকর পরিকল্পনা ও উদ্যোগ।
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ