শিরোনাম
চবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭:০০, ১৪ জুলাই ২০২৫
ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
সেই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বারের মতো সোমবার (১৪ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার পাদদেশে ক্যাম্পাস সংস্কারের নিমিত্তে সাত দফাকে কেন্দ্র করে প্রায় দেড় ঘন্টা যাবত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটি।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের আমানত হলের সভাপতি সৈকত হাসান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সভাপতি রবিউল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সাহিত্য সম্পাদক সাইদ বিন হাবিব, শিক্ষা সম্পাদক মোনায়েম করিম, ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক রুহুল আমিন, অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ, বায়তুল মাল সম্পাদক আহসান মুজাহিদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সেক্রেটারি পারভেজ আহমেদ এবং ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ইব্রাহিম হোসেন রনিসহ অন্যান্যরা।
দাবি বাস্তবায়ন করা না হলে কঠোর কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের আমানত হলের সভাপতি সৈকত হাসান বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫৯ বছর পার করে ফেলেছি কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত অর্ধেক শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা করতে পারিনি। এই প্রশাসনকে আমরা বিপ্লবী প্রশাসন মনে করি না, আমরা মনে করছি এরা এখনও স্বৈরাচারের দালালি করছে। এই প্রশাসন ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর ক্যাম্পাসে মাত্র ২২% শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা করতে পেরেছে, এটা স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার। আমাদের শিক্ষার্থীদের এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা না হলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।
হলগুলোতে ভুতুড়ে পরিবেশ এবং উইপোকার বিচরণ উল্লেখ করে ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক রুহুল আমিন আবির বলেন, শাহ আমানত হল এবং শাহ জালাল হলে গেলে মনে হয় ভূতুরে একটা পরিবেশে যাওয়া হয়েছে। আলমারিগুলো ভেঙ্গে গেছে, সেখানে থাকা যায়না, ভয় লাগে। উইপোকার কামড় খাওয়ার ব্যথা সহ্য করতে হয়।
অফিস সম্পাদক হাবিবুল্লাহ খালেদ বলেন, জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা এবং জুলাইকে অবমাননা করে ফরহাদ এবং হৃদয় তরুয়ার ক্যাম্পাসে থাকা বড়ো কষ্টের। জুলাইয়ে হামলাকারী ফ্যাসিবাদের দোসর, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বিচার করতে হবে। তা না হলে আমরা মাঠে নামব কিন্তু ফলাফল না নিয়ে ঘরে ফিরব না।
কয়েকটি বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বিশ্ববিদ্যালয় শিবিরের সেক্রেটারি পারভেজ আহমেদ বলেন, শিক্ষকদের কখনো আবাসন ও যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়ে কষ্ট করতে হয় না। অথচ আমাদের ভাই কিংবা বোনদের রক্তাক্ত অবস্থায় শাটল থেকে ফিরতে হয়। তিনি বলেন, কিছুদিন আগে তারা একজন সন্ত্রাসীকে প্রমোশন দেয়ার জন্য বোর্ড বসিয়েছিল। আবারো বাতাসে গুঞ্জন শোনা যায়, স্বৈরাচারীদের প্রমোশন দেওয়ার জন্য তারা নাকি আবারও গোপনে বোর্ড বসাবে।
প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে এই নেতা বলেন, খবরদার! এ ধরনের অপকর্ম করার দুঃসাহস আপনারা করবেন না। যদি করে থাকেন, তাহলে কুয়েটের ভিসি থেকে শিক্ষা নেন।
ভিসি নাকি স্বৈরাচারদের খুঁজে পান না উল্লেখ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় নেতা ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, এই সাত দফা দাবি শুধু ছাত্রশিবিরের দাবি নয়, ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর দাবি। যা প্রতিটি ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের দাবি হওয়া উঠিত। এই দাবি মানার জন্য যে ধরনের সংগ্রাম দরকার সেই ধরণের সংগ্রামে আমরা অংশগ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, ভিসি নাকি ফ্যাসিবাদের দোসরদের খুঁজে পাননা? তাহলে আমরা বলতে চাই আপনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের অফিসে আসেন আপনাকে একটার পর একটা ফাইল দেওয়া হবে।
সাত দফা দাবিরগুলো হলো–
১. শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করা। আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করা।
২. সব বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনতিবিলম্বে সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার আধুনিকায়ন নিশ্চিত করা।
৩. পর্যাপ্ত ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করা।
৪. অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
৫. দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং অন্যান্য স্থাপনাসমূহ সংস্কার করা।
৬. জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা।
৭. বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগের সাথে জড়িত সবার বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করা।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে