শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১১:১২, ১৬ জুলাই ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর নিষেধাজ্ঞার হুমকির পরও ইউক্রেনের আরো অঞ্চল দখলে দিতে পারেন পুতিন। ক্রেমলিনের ঘনিষ্ঠ তিনটি সূত্র রয়টার্সকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, দেশটির পূর্বে রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ইউক্রেনীয় সেনাদের মধ্যে আট বছর ধরে যুদ্ধ চলার পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন পুতিন। তিনি বিশ্বাস করেন, রাশিয়ার অর্থনীতি এবং তার সামরিক বাহিনী পশ্চিমা যেকোনো পদক্ষেপ মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী।
সোমবার ট্রাম্প পুতিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে রাজি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছেন। যার মধ্যে প্যাট্রিয়ট ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাও রয়েছে। ৫০ দিনের মধ্যে শান্তি চুক্তি না হলে রাশিয়ার উপর আরো নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প।
ক্রেমলিনের শীর্ষ পর্যায়ের চিন্তা-ভাবনার সঙ্গে পরিচিত এই তিনটি রুশ সূত্র বলেছে, পশ্চিমাদের চাপের মুখে পুতিন যুদ্ধ থামাবেন না এবং বিশ্বাস করেন যে রাশিয়া, এর আগেও পশ্চিমাদের আরোপিত কঠোরতম নিষেধাজ্ঞা পার হয়ে এসেছে। আরো অর্থনৈতিক কষ্ট সহ্য করতে পারবে। এমনকি রাশিয়ার তেল ক্রেতাদের লক্ষ্য করে মার্কিন শুল্ক আরোপের হুমকি থাকার পরও।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পুতিন মনে করেন ইউক্রেনে শান্তি আলোচনা নিয়ে কেউই তার সঙ্গে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করেননি। তাই তিনি যা চান তা না পাওয়া পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যাবেন।
সূত্রটি আরো জানায়, ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে বেশ কয়েকটি টেলিফোন কল এবং মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের রাশিয়া সফর সত্ত্বেও, পুতিন বিশ্বাস করেন যে শান্তি পরিকল্পনার ভিত্তি নিয়ে তার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়নি।
সূত্র জানায়, পুতিন ট্রাম্পের সাথে সম্পর্ককে মূল্য দেন এবং উইটকফের সঙ্গে ভালো আলোচনাও করেছেন। তবে রাশিয়ার স্বার্থকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে দেখছেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে, হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে তার প্রশাসনের সময় যুদ্ধ শুরু হতে দেওয়ার জন্য দায়ী করেন।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, শান্তির জন্য পুতিন যেসব শর্ত আরোপ করেছেন তার মধ্যে রয়েছে আইনত বাধ্যতামূলক অঙ্গীকার থাকবে যে ন্যাটো পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ করবে না, ইউক্রেনীয় নিরপেক্ষতা এবং তার সশস্ত্র বাহিনীকে সীমাবদ্ধ করা। সেখানে বসবাসকারী রাশিয়ান ভাষাভাষীদের সুরক্ষা এবং রাশিয়ার আঞ্চলিক লাভের স্বীকৃতির বিষয়টিও থাকবে।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ইউক্রেন কখনই তার বিজিত অঞ্চলগুলোতে রাশিয়ার সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেবে না এবং ন্যাটোতে যোগদানের ইচ্ছা আছে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সার্বভৌম অধিকার কিয়েভের রয়েছে।
তবে তার কার্যালয় এই প্রতিবেদনের জন্য মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
এ ছাড়া দ্বিতীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, পুতিন পশ্চিমা চাপের কারণে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতির চেয়ে মস্কোর লক্ষ্যগুলোকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন এবং রাশিয়ান তেল কেনার জন্য চীন ও ভারতের উপর শুল্ক আরোপের মার্কিন হুমকি নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন নন।
ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড ইতোমধ্যেই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রাশিয়া। তারপরও গত তিন মাসে প্রায় এক হাজার ৪১৫ বর্গকিলোমিটার (৫৪৬ বর্গমাইল) অগ্রসর হয়েছে।
প্রথম সূত্র জানায়, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্ষুধা বাড়ে। রাশিয়ার বাহিনী যত অগ্রসর হচ্ছে ততই অঞ্চল দখলের জন্য পুতিনের আগ্রহ বাড়ছে। যার অর্থ যুদ্ধ বন্ধ না হলে পুতিন আরো অঞ্চল দখলে নিতে পারেন। অন্য দুটি সূত্র স্বাধীনভাবে একই কথা নিশ্চিত করেছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ