ঢাকা, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মুহররম ১৪৪৭

বহুমাত্রিক আল মাহমুদ

রায়হান উল্লাহ

প্রকাশ: ১৪:৪৫, ১২ জুলাই ২০২৫

বহুমাত্রিক আল মাহমুদ

ছবি: সংগৃহীত

আল মাহমুদ একজন শক্তিমান কবি ছিলেন। তার প্রকৃত নাম আব্দুস শুকুর আল মাহমুদ। তার পূর্বপূরুষরা হবিগঞ্জ জেলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসেছেন। আল মাহমুদ জন্মেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়াতেই; ১১ জুলাই ১৯৩৬ খ্রিস্টাব্দে। শিল্প-সাহিত্যের উর্বর ভূমি ব্রাহ্মণবাড়িয়া। নদী-হাওড়বেষ্টিত জেলা। নানা লোকজ উপাদান জেলাটির চারপাশে ছড়ানো। এসবই আল মাহমুদকে ভাবায়িত করেছে।

আল মাহমুদ প্রচলিত লেখাপড়ার ধার ধারেননি। কিন্তু তিনি বিদ্যান। বালক আল মাহমুদ তিতাস নদীর তীরে বসে থাকতেন। স্কুল তাকে টানেনি। যদিও পরিবারের ইচ্ছায় কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার সাধনা হাই স্কুল এবং পরে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড হাই স্কুলে পড়ালেখা করেছেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় থাকা নানা লাইব্রেরি চষে বেড়িয়েছেন।

একটি ঘটনা আল মাহমুদের জীবনের বাঁক ঘুরিয়ে দেয়। আল মাহমুদের কাছের বন্ধু মুহম্মদ মুসা। তিনি একজন গবেষক। তখন ভাষা আন্দোলন সমাগত। মুহম্মদ মুসা ভাষা আন্দোলনের একটি লিফলেটে আল মাহমুদের কবিতার কয়েকটি লাইন ঢুকিয়ে দেন। পুলিশ আল মাহমুদকে তন্ন তন্ন করে তখন খুঁজে বেড়ায়। আল মাহমুদ বেড়িয়ে পড়েন বাড়ি থেকে। সেই থেকে জীবদ্দশায় তার আর ফেরা হয়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

আল মাহমুদ শুধুই কি কবি? তিনি ছোটগল্পকার হিসেবেও বাংলা সাহিত্যে শক্ত অবস্থানে আছেন। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার অসামান্য একটি উপন্যাস আছে- উপমহাদেশ। তিনি বিরল লেখক-সাহিত্যিক-মুক্তিযোদ্ধাদের খুব সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন। জীবিতকালে নানা সময় তিনি গর্ব করতেন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ বিষয়ে। তিনি একজন ভালো মানের প্রাবন্ধিক। শিশুসাহিত্যেও খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। সবচেয়ে সুখের বিষয় তিনি একজন উৎকৃষ্ট মানের গদ্যকার। কবিদের গদ্য সব সময় ভালো হয়- এমন ভাবনাকে আরো পোক্ত করেছেন আল মাহমুদ।

আল মাহমুদের বড় একটি পরিচয় তিনি সাংবাদিক ছিলেন। জাসদের মুখপাত্র গণকণ্ঠের সম্পাদক ছিলেন। ঢাকা জীবনের শুরুটা অবশ্য প্রুফ রিডার দিয়ে। ফুল-লতা-পাতা আঁকা স্যুটকেস নিয়ে তিনি ঢাকা আসেন। তার ভাষ্যে, এই স্যুটকেসে তিনি নিয়ে এসেছিলেন আশ্চর্য সব বিষয়। বাংলার প্রকৃতি, নদী-খাল; জীবন। সাংবাদিকতা করার কারণে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রোষানলে পড়েন। তাকে গ্রেপ্তার করা হয় একবার। তিনি জেল খাটেন অনেকটা সময়। ওই সময় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জেলে ছিলেন তার সঙ্গে। তারা আল মাহমুদকে বলতেন, কবি আপনি কেন জেলে? আমাদের জেল খাটলে লাভ। আপনি শুধুই জেল খাটছেন। আল মাহমুদ জেলজীবনকে বৃথা যেতে দেননি। তিনি একটি পুরো কাব্যগ্রন্থ লিখে ফেলেন ওই সময়। পরে আল মাহমুদ এক সময় বলেছিলেন, মুজিব সাহেবকে আমারে নিয়ে ভুল বুঝানো হয়েছে। তিনি হয়তো রুষ্ট হয়েই আমাকে জেলে পাঠিয়েছিলেন। 

জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর আল মাহমুদকে বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহ-পরিচালক হতে বললেন। অনেকেই তখন বঙ্গবন্ধুকে বললেন, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া না করা একজনকে বসাবেন। বঙ্গবন্ধু তাদের বলতেন, কবির আবার লেখাপড়া কি?

পরে আল মাহমুদ অনেকটা সময় শিল্পকলার সহ-পরিচালক ছিলেন। পরে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করে অবসরে যান। শিল্পকলায় চাকরি করা সময়ে একজন অভিনেতা যিনিও শিল্পকলার পরিচালক ছিলেন, তিনি কবিকে তাচ্ছিল্য করতেন। তার প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া না থাকার কারণে হয়তো।

আল মাহমুদ প্রতিষ্ঠা পাননি যখন। থাকেন ব্রাহ্মবাড়িয়ায়। তার কোনো বই প্রকাশ হয়নি। অভাব-অনটনে তাকে কবি-সাহিত্যেকরা সাহায্য করেন। তার প্রথম বই প্রকাশ হয় কবি-সাহিত্যিক-সংস্কৃতিবানদের চাঁদার দ্বারা।

তার সাহিত্য চর্চার প্রথম দিকের সময় তিনি সমাজতন্ত্রের প্রতি আস্থাশীল ছিলেন। ১৯৫৪ সাল অর্থাৎ ১৮ বছর বয়স থেকে তার কবিতা প্রকাশ পেতে থাকে। ঢাকা থেকে প্রকাশিত সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকা এবং কলকাতার নতুন সাহিত্য, চতুষ্কোণ, ময়ূখ ও কৃত্তিবাস ও বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকায় লেখালেখির সুবাদে ঢাকা-কলকাতার পাঠকদের কাছে তার নাম পরিচিত হয়ে ওঠে এবং তাকে নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত হয়। কাব্যগ্রন্থ লোক লোকান্তর (১৯৬৩) সর্বপ্রথম তাকে স্বনামধন্য কবিদের সারিতে জায়গা করে দেয়। এরপর কালের কলস (১৯৬৬), সোনালি কাবিন (১৯৭৩), মায়াবী পর্দা দুলে উঠো (১৯৭৬) কাব্যগ্রন্থগুলো তাকে প্রথম সারির কবি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ১৯৯৩ সালে বের হয় তার প্রথম উপন্যাস কবি ও কোলাহল। 

তিনি আধুনিক বাংলা কবিতার নগরকেন্দ্রিক প্রেক্ষাপটে ভাটি বাংলার জনজীবন, গ্রামীণ আবহ, নদীনির্ভর জনপদ, চরাঞ্চলের জীবনপ্রবাহ এবং নরনারীর চিরন্তন প্রেম-বিরহকে তার কবিতায় অবলম্বন করেন। নারী ও প্রেমের বিষয়টি তার কবিতায় ব্যাপকভাবে এসেছে। উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী হিসেবে নারীর যৌনতা, আকাঙ্ক্ষা ও ভোগের লালসাকে তিনি শিল্পের অংশ হিসেবেই দেখিয়েছেন। আধুনিক বাংলা ভাষার প্রচলিত কাঠামোর মধ্যে স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততায় আঞ্চলিক শব্দের প্রয়োগ তার অনন্য কীর্তি। ১৯৬৮ সালে ‘লোক লোকান্তর’ ও ‘কালের কলস’ নামে দুটি কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার সবচেয়ে সাড়া জাগানো সাহিত্যকর্ম সোনালি কাবিন। ১৯৭০-এর দশকের শেষার্ধ তার কবিতায় বিশ্বস্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস উৎকীর্ণ হতে থাকে; এর জন্য তিনি প্রগতিশীলদের সমালোচনার মুখোমুখি হন। ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস কবি ও কোলাহল। কোনো কোনো তাত্ত্বিকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, বিশ্বাসগ্রস্ততার কারণে তার বেশকিছু কবিতা লোকায়তিক সাহিত্যদর্শন দৃষ্টান্তবাদ দ্বারা অগ্রহণযোগ্য। তবে একথাও সত্য, কবিতায় দর্শন থাকে; কিন্তু দর্শন দ্বারা কবিতা নিয়ন্ত্রিত নয়, কবিতা আবেগের কারবার।

আল মাহমুদ নগর জীবনে অনেক সংগ্রাম করে বেঁচে ছিলেন। তার ছিল বৃহৎ পরিবার। পরিবারের ভরণপোষণ সামলাতে তাকে নানাকিছু করতে হয়ছে। অনেকেই সমালোচনা করেন, আল মাহমুদ ১৯৯০-এর দশকে ইসলামী ধর্মীয় বোধের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তার কবিতায় ইসলামী চেতনার প্রতিফলন ঘটতে থাকে। যদিও তিনি বিভিন্ন সময় তা অস্বীকার করেছেন। বাস্তবতা হলো অনেকে তাকে দলে নিতেন না। তিনি কিছুটা একা হয়ে গিয়েছিলেন। এ সময় তাকে দলীয় প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রগতির নামধারীরা তখন তার কাছ থেকে দূরে থেকেছেন। তিনি অভাব অনটন ও একাকীত্বের জায়গাটিতে ব্যবহার হয়েছেন। তিনিও মানুষ এটি তার বিচ্যুতি বলেই ধরতে পারি। তার আরেকটি বিচ্যুতির কথা শুনা যায়। স্বৈরাচার ও এক সময়ের বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কবি হতে চেয়েছিলেন। তার অনেক কবিতা দেশের পত্র-পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। সমালোচনা আছে, আল মাহমুদ তাকে কবিতা লিখে দিতেন। আল মাহমুদকে এরশাদ রাজধানীতে একটি বাড়িও দেন। ওই বাড়ি বিক্রির টাকায় তিনি সংসার সামলেছেন। ছেলে-মেয়েদের লেখপাড়ার খরচ জুগিয়েছেন।

আল মাহমুদ ও কবি শামসুর রাহমানের মধ্যে গভীর প্রণয় ছিল। এ প্রণয় অনেক সময় ফিঁকেও হয়েছে। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বও কাজ করত। আদর্শ ও খ্যাতির দ্বন্দ্ব। তাদের দুজনের গভীর ভাব নষ্ট করার পেছনে কিছু মানুষ কাজ করত। তারা দুজনকেই ভুল পথে পরিচালনার অপচেষ্টা করত। একবার আল মাহমুদ আক্ষেপ করে বলেছিলেন, যে কোনো প্রসঙ্গে কবি শামসুর রাহমান ও আমার মাঝে ৩০টি নাম থাকত। তারা এখন কই? তাদের কেউই সাহিত্যে স্থায়ী আসন নিতে পারেনি। এখন শামসুর রাহমান ও আমার নাম সমভাবে উচ্চারিত হয়।

আল মাহমুদের উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো- লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৭৩), মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো (১৯৭৬), আরব্য রজনীর রাজহাঁস, বখতিয়ারের ঘোড়া, অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না, Selected Poems- Al Mahmud (১৯৮১), দিনযাপন, দ্বিতীয় ভাঙন, একটি পাখি লেজ ঝোলা, পাখির কাছে ফুলের কাছে, আল মাহমুদের গল্প, গল্পসমগ্র, প্রেমের গল্প, যেভাবে বেড়ে উঠি (আত্মজীবনী), কিশোর সমগ্র, কবির আত্মবিশ্বাস, কবিতাসমগ্র, কবিতাসমগ্র-২, পানকৌড়ির রক্ত (গল্পগ্রন্থ), সৌরভের কাছে পরাজিত, গন্ধ বণিক, ময়ূরীর মুখ, না কোন শূন্যতা মানি না, নদীর ভেতরের নদী, প্রেম ও ভালোবাসার কবিতা, প্রেম প্রকৃতির দ্রোহ আর প্রার্থনা কবিতা, প্রেমের কবিতা সমগ্র, উপমহাদেশ, বিচূর্ণ আয়নায় কবির মুখ, কবিতার জন্য সাত সমুদ্র, উপন্যাস সমগ্র-১, উপন্যাস সমগ্র-২, উপন্যাস সমগ্র-৩, তোমার গন্ধে ফুল ফুটেছে (২০১৫) ছায়ায় ঢাকা মায়ার পাহাড় (রূপকথা), ত্রিশিরা ও উড়াল কাব্য। কবি আল মাহমুদের একমাত্র মহাকাব্য ‘এ গল্পের শেষ নেই শুরুও ছিল না’। বইটি প্রকাশ করেছে সরলরেখা প্রকাশনা সংস্থা।

আল মাহমুদ ব্যক্তিগত জীবনে সৈয়দা নাদিরা বেগমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ে।

আল মাহমুদ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮), জয় বাংলা পুরস্কার (১৯৭২), হুমায়ূন কবীর স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭২), জীবনানন্দ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭২), কাজী মোতাহার হোসেন সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৬), কবি জসীম উদ্দীন পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৬), একুশে পদক (১৯৮৬), নাসির উদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৯০), ভানুসিংহ সম্মাননা পদক (২০০৪), লালন পুরস্কার (২০১১) ও বাসাসপ কাব্যরত্ন (২০১৭)। 

আল মাহমুদের সাহিত্য প্রতিভার উন্মেষ ঘটেছিল ২০ শতকের পঞ্চাশের দশকে। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ৮২ বছর বয়সে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবি আল মাহমুদ মৃত্যুবরণ করেন। তিনি নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। তার বিখ্যাত কবিতা তিতাস- ‘এ আমার শৈশবের নদী, এই জলের প্রহার/সারাদিন তীর ভাঙে, পাক খায়, ঘোলা স্রোত টানে/যৌবনের প্রতীকের মতো অসংখ্য নৌকার পালে/গতির প্রবাহ হানে। মাটির কলসে জল ভরে/ঘরে ফিরে সলিমের বউ তার ভিজে দুটি পায়। অদূরের বিল থেকে পানকৌড়ি, মাছরাঙা, বক/পাখায় জলের ফোঁটা ফেলে দিয়ে উড়ে যায় দূরে;/জনপদে কি অধীর কোলাহল মায়াবী এ নদী/এনেছে স্রোতের মতো, আমি তার খুঁজিনি কিছুই।/কিছুই খুঁজিনি আমি, যতবার এসেছি এ তীরে/নীরব তৃপ্তির জন্য আনমনে বসে থেকে ঘাসে/নির্মল বাতাস টেনে বহুক্ষণ ভরেছি এ বুক।/একটি কাশের ফুল তারপর আঙুলে আমার/ছিঁড়ে নিয়ে এই পথে হেঁটে চলে গেছি। শহরের/শেষ প্রান্তে যেখানে আমার ঘর, নরম বিছানা,/সেখানে রেখেছি দেহ। অবসাদে ঘুম নেমে এলে/আবার দেখেছি সেই ঝিকিমিকি শবরী তিতাস/কি গভীর জলধারা ছড়ালো সে হৃদয়ে আমার।/সোনার বৈঠার ঘায়ে পবনের নাও যেন আমি/বেয়ে নিয়ে চলি একা অলৌকিক যৌবনের দেশে।’ 

তিনি এখন এখন চিরঘুমে স্মৃতির ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিতাসের তীরে। একা অলৌকিক অনন্তের দেশে, মহাকালের খোঁজে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন