শিরোনাম
রাঙ্গামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০:৩৯, ২২ জুলাই ২০২৫
ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
মরদেহ পৌঁছানোর পরপরই আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর শুনে দূর-দূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন তাকে শেষবারের মতো দেখতে। উপস্থিত সবাই উক্য চিংয়ের অকাল মৃত্যুতে শোকাহত ও হতবাক।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় উক্য চিং এর পিতা উসাইমং মারমা বলেন, সকাল নয়টায় ছেলের মরদেহ বুঝে পাওয়ার পর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গ্রামের বাড়িতে রওনা দিই। সন্ধ্যা নাগাদ গ্রামে ফিরে আসি। কত স্বপ্ন নিয়ে ছেলেকে ঢাকায় পাঠালাম। আজ আমার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আগামীকাল (বুধবার) সকাল নয়টায় পারিবারিক শ্মশানে ছেলের সৎকার করা হবে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে দাদু কংহলাপ্রু মারমা (৭৫) জানান, নাতিকে এইভাবে হারাবো কখনো ভাবিনি। অত্যন্ত ভদ্র ও সুদর্শন ছিলো আমার নাতি। সে অনেক মেধাবী ছাত্র ছিলো। উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকাতে গেছিলো। কিন্তু লাশ হয়ে ফিরছে আমার নাতি। নাতির সাথে কত স্মৃতি।
এদিকে নাতির পুরানো ছবি দেখে বার বার বিলাপ যাচ্ছেন দাদি ক্রাপ্রুমা মারমা (৬৫)। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, নাতিকে ছোটবেলায় কোলে পিঠে আদর করে মানুষ করেছি। তারা বান্দরবান থাকলেও ছুটিতে দাদুর বাড়িতে আসতো। কত দুষ্টুমি করতো আমার নাতিটা। নাতির এই মৃত্যু আমরা কোনওভাবেই মানতে পারছি না। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো সে সামান্য আঘাত পেয়েছে কিন্তু পরে যখন নাতি উক্য চিং এর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ার কথা শুনি তখন নিজেকে আর ঠিক রাখতে পারছিলাম। সে পড়ালেখায় খুব ভালো ছিলো। আমার নাতিটার এইভাবে মৃত্যু হবে, তা আমরা কখনো কল্পনা করিনি।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুরে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হলে দগ্ধ হয় উক্য চিং মারমা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। শরীরের শতভাগ অংশ পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসকরা সব চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি। রাত ২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে