শিরোনাম
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১:৫৯, ২২ জুলাই ২০২৫
ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাড়িটি ঘিরে ফেললে শাহিন নিজেকে রক্ষা করতে বাথরুমে গিয়ে ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে আত্মগোপনের চেষ্টা করেন। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা তালা ভেঙে তাকে বের করে এনে গণপিটুনির পর পুলিশের হাতে তুলে দেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, মেহেদী হাসান শাহিন ফতুল্লা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি এবং থানা যুবলীগ সভাপতি মীর সোহেল আলীর ঘনিষ্ঠ সহযোগী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সহিংসতার সময় থেকেই তিনি পলাতক ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঈদ উপলক্ষে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সময় কাটাতে তিনি গোপনে শহরে ফিরে আসেন এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসায় অবস্থান করছিলেন।
ওই তথ্য নিশ্চিত হওয়া মাত্রই ফতুল্লা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দোলনের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী সোমবার দিবাগত রাতে বাড়িটি ঘেরাও করে। উপস্থিত ছাত্রদল নেতাকর্মীরা শাহিনকে ধরে গণধোলাই দেয় এবং পরে পুলিশে সোপর্দ করে।
এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, মেহেদী হাসান শাহিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত সহিংসতার ঘটনায় দায়ের হওয়া দুটি হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামি। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান আছে।
উল্লেখ্য, গত বছর সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে একজন স্থানীয় কলেজের শিক্ষার্থী এবং অপরজন অস্থায়ী ভিত্তিতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করতেন। ওই ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতি জানান বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। আন্দোলনে দমন-পীড়ন ও হামলার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় মেহেদী হাসান শাহিনসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতার নাম উঠে আসে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ছাত্র আন্দোলনের নামে পরিচালিত হামলা ও গুম-খুনের ঘটনায় সরকারের ছত্রছায়ায় থাকা দলীয় ক্যাডাররাই ছিল মূল ভূমিকায়। শাহিন সেই সব হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ফতুল্লায় শাহিনের গ্রেফতারের খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। অনেকে বলছেন, যারা ছাত্রদের রক্ত ঝরিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে