শিরোনাম
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫:২৭, ২ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৭:১১, ২ মে ২০২৫
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত
তারা এলাকায় এসে খামারিদের সঙ্গে কথা বলেন এবং মৃত পশুর ময়নাতদন্ত ও রোগাক্রান্ত পশুর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালকের পক্ষে ৬ সদস্যের তদন্ত টিমের নেতৃত্ব দেন চট্টগ্রাম জেলা ভেটেনারি কর্মকর্তা ডা. মো. সাহব উদ্দিন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে ছিলেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী ও ডা. তাহমিনা আক্তার, খাগড়াছড়ি জেলা ভারপ্রাপ্ত ভেটেরিনারি কর্মকর্তা ডা. মনিরুল ইসলাম, উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল এবং উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. রুবায়েতুল ইসলাম।
তদন্ত কমিটির সদস্য চট্টগ্রাম জেলা ভেটেরিনারি বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. জপু চক্রবর্তী বলেন, “এমন ঘটনা এর আগে কোথাও ঘটেনি। আমরা অসুস্থ ও মৃত পশুর স্যাম্পল সংগ্রহ করেছি। এগুলো ঢাকার সেন্টার ভেটেরিনারি ল্যাবে পাঠানো হবে। এরপর জানা যাবে আসলে কী ঘটেছিলো।
স্থানীয় খামারিরা জানান, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের পশু চিকিৎসকের পরামর্শে সরকারি ভ্যাকসিন দেওয়ার পরই এই ঘটনা ঘটেছে। তাদের দাবি এসব ভ্যাকসিনে সমস্যা ছিলো অথবা একই সিরিঞ্জে সবগুলো পশুকে ভ্যাকসিন দেওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, ভ্যাকসিন দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পশুর অতিরিক্ত জ্বর, চামড়ায় গুটি ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে ভ্যাকসিন দেওয়া বেশ কিছু গরু-ছাগল মারা যেতে শুরু করে। গত কয়েকদিনে চারটি গরু এবং অর্ধশতাধিক ছাগলের মৃত্যু হয়েছে।
লামকুপাড়া এলাকার খামারি লুৎফর রহমান বলেন, “ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই দিন পর তার ৩টি ছাগল ও ২টি গরু মারা যায়। খামারে আরও অন্তত ১৫টি ছাগলকে ভ্যাকসিন দিয়েছেন। বর্তমানে সবগুলা অসুস্থ রয়েছে। গরু-ছাগলগুলো হারিয়ে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আমাদের গ্রামে যারা ভ্যাকসিন দিয়েছে তাদের সবার গরু গুরুতর অসুস্থ। তিনি ঋণের টাকায় গরু কিনে লালন-পালন করছেন বলে জানিয়েছেন।
লামকুপাড়া গ্রামের গৃহিনী সায়েরা খাতুন বলেন, “আমার দিনমজুর স্বামী বেশিরভাগ অসুস্থ থাকেন। গরু-ছাগল লালন-পালন করে সংসার চালাই। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর আমার ৩টা ছাগল মারা গেছে, বাড়িতে আরও ৩টা অসুস্থ।
একই অভিযোগ লামকুপাড়ার ওবায়দুল হক, আবুল কাশেম সওদাগর, আবদুল করিম, শান্তনু দেবী ও চিকনি ত্রিপুরার। তারা বলেন, “আমরা চাই সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে মৃত পশু মাটিচাপা দেওয়া এবং আক্রান্ত পশুগুলো অন্য পশু থেকে আলাদাভাবে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা ডা. মো. সাহব উদ্দিন স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নমুনা সংগ্রহ করেছি। কেন গরু-ছাগল অসুস্থ হয়েছে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে জানা যাবে।”
ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ