ঢাকা, শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

১২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৬

‌‘৫ আগস্টের পর মাথা চাড়া দেয়া পরগাছাদের প্রতিহত করতে হবে’

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৭:৩৬, ২৬ অক্টোবর ২০২৪

‌‘৫ আগস্টের পর মাথা চাড়া দেয়া পরগাছাদের প্রতিহত করতে হবে’

জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন,  জনগণ বিভক্ত জাতি দেখতে চায় না। তারা ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায়। আমরাও দল-মতের ঊর্দ্ধে উঠে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই। দল-মতের ভিন্নতা থাকলেও দেশের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বহু আগাছা-পরগাছা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। এদেরকে প্রতিহত করতে হবে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে জামায়াতে ইসলামীর বগুড়া শহর ও জেলা শাখার রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

শফিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির আন্দোলনের কোনো একক মাস্টারমাইন্ড নেই। দেশের মানুষ আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। আন্দোলনে নেতৃত্বের কৃতিত্ব যুব সমাজের। যাদের জীবনের বিনিময়ে আমরা জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছি। সেই সব বীর শহীদদেরকে জামায়াতে ইসলামী দলীয়ভাবে বিবেচনা করে না। তারা জাতীয় বীর।

আমিরে জামায়াত বলেন, শেখ হাসিনার সরকার বিচারের নামে প্রহসন করে জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ঠান্ডা মাথায় খুন করেছে। জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিসসহ সারাদেশের সকল অফিস বন্ধ করে দিয়েছিল। সাড়ে ১৩ বছর আমরা আমাদের অফিসে বসে কোনো কাজ করতে পারিনি। গায়ের জোরে আমাদের নিবন্ধন এবং প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বুলডোজার দিয়ে আমাদের বাড়ি-ঘর মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দিশেহারা হয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। কিন্তু শেখ হাসিনাকে শুধু ক্ষমতাই ছাড়তে হয়নি, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।

শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের নেতা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মক্কা থেকে হিজরতের পরে যেভাবে ইসলামের জন্য মহান মাবুদ দুয়ার খুলে দিয়েছিলেন, তেমনি ৫ আগস্টের পর আমাদের জন্য সম্ভাবনার অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি রুকনদের প্রতি আহ্বান জানান।

আমিরে জামায়াত বলেন, চব্বিশের আন্দোলনের শেষের দিনগুলো মোটেও সহজ ছিল না। আন্দোলনকারীদের জীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তারা একসঙ্গে বসে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই তারা লড়াই করে জাতিকে মুক্তি এনে দিয়েছে। হাজারো প্রাণের বিনিময়ে, হাজার হাজার আহতদের আর্তনাদের বিনিময়ে বিজয় এসেছে। সকল শহীদ এবং আহতদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। জামায়াতে ইসলামী সাধ্যমত শহীদ ও আহতদের পাশে থাকবে। তিনি গণবিপ্লবে বগুড়ার শহীদ ও আহতদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেন। 

শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের দেশ বিপুল সম্ভাবনার দেশ। জাতি একটি ইনসাফপূর্ণ সমাজ চায়। গোটা জাতি আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। জাতিকে হতাশ করা যাবে না। তাদেরকে আশাবাদী করতে হবে। সবার ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। তিনি রুকনদেরকে ব্যক্তি ও পরিবার গঠনে দায়িত্ববান হওয়ার আহ্বান জানান।

শহরের ঐতিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে আয়োজিত রুকন সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামী বগুড়া শহর শাখার আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন ও বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী।

সম্মেলনে নবনির্বাচিত বগুড়া শহর আমির অধ্যক্ষ আবিদুর রহমান সোহেল ও বগুড়া জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল হক সরকারকে শপথ বাক্য পাঠ করান আমিরে জামায়াত।

আরও পড়ুন