ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

১ শ্রাবণ ১৪৩২, ২০ মুহররম ১৪৪৭

হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ

তারেক ও জুবাইদার বিচার নিরপেক্ষ হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩:৪৬, ১৫ জুলাই ২০২৫

তারেক ও জুবাইদার বিচার নিরপেক্ষ হয়নি

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় অধস্তন আদালতের বিচার নিরপেক্ষ হয়নি। 

সোমবার (১৪ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ৫২ পৃষ্ঠার হাই কোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এসব কথা উঠে এসেছে।

বিচারিক আদালতে দ্রুতগতিতে সাক্ষ্য নেওয়া ও রায় ঘোষণা করা, জুবাইদা রহমানকে নোটিস না করা এবং অভিযোগ গঠনে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে বলেও রায়ে বলা হয়।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় তারেক রহমানের নয় বছর এবং তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের তিন বছরের সাজা হয় বিচারিক আদালতে।

রায়ের পর্যবেক্ষণে হাই কোর্ট বলেছেন, বিচারিক আদালতে দুই মাস চার দিনে ৪২ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া এবং সাক্ষী শেষে আট দিনের মধ্যে রায় দেওয়ার এমন দ্রুতগতি ও সমাপ্তি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস তৈরি করে যে বিচার নিরপেক্ষ হয়নি।

গত ২৮ মে হাই কোর্ট ওই মামলায় তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানকে খালাস দিয়ে রায় দেন। সাজার বিরুদ্ধে জুবাইদা রহমানের দায়ের করা আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

২০০৮ সালে কারামুক্তির পর তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান। স্ত্রী জুবাইদা রহমান এবং মেয়ে জায়মা রহমানও তার সঙ্গে ছিলেন।

গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তারেক রহমান ও তার মা খালেদা জিয়াকে কয়েকটি মামলা থেকে রেহাই দেন আদালত। গত বছরের ২ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় জুবাইদার দণ্ডাদেশ এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

সেই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, সাজা স্থগিতের আবেদনে ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে আত্মসমর্পণপূর্বক আপিল দায়েরের শর্তে দণ্ডাদেশ স্থগিতের ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

১৭ বছর পর গত ৬ মে শাশুড়ির সঙ্গে লন্ডন থেকে দেশে ফেরেন জুবাইদা। পরে তার আইনজীবীরা হাই কোর্টে আপিলের আবেদন করেন।

মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও রায় পাঠের মধ্য দিয়ে গত ২২ মে এ মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়। আপিল শুনানিতে জুবাইদা রহমানের সঙ্গে তারেক রহমানের খালাস চেয়ে আর্জি জানান তাদের আইনজীবীরা।

জুবাইদার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার সময়ে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কাফরুল থানায় তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে এ মামলা করেছিল দুদক।

মামলায় চার কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন এবং মিথ্যা তথ্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। তারেক রহমানকে সহায়তা ও তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয় জুবাইদা ও তার মায়ের বিরুদ্ধে।

পরে একই বছর তারেক ও জুবাইদা রহমান মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে পৃথক রিট আবেদন করেন। ২০০৮ সালের ৩১ মার্চ এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক।

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে ২ আগস্ট ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ও মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ মামলায় তারেক রহমানকে নয় বছর ও জুবাইদা রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন। সেই সঙ্গে তাদের জরিমানাও করা হয়।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন