শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:৪২, ১৯ জুন ২০২৫
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের এডিসি মাইন উদ্দিন জানান, শরিফুল ইসলামের হাতে হাতকড়া থাকলেও ধাতব কিছু ব্যবহার করে সেটি ঢিলা করে খুলে ফেলেন তিনি। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবলের হাতে আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যান। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানাকে জানানো হয়েছে এবং গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু হয়েছে।
আদালতের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, এক পুলিশ সদস্য চারজন আসামিকে নিয়ে হাজতখানার দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। শরিফুল ইসলাম তাদের মধ্যে সবার সামনে ছিলেন এবং কনস্টেবল দড়ি ধরে পেছনে হাঁটছিলেন। ভবনের নিচতলায় পৌঁছালে শরিফুল কৌশলে হাতকড়া খুলে ফেলেন এবং হঠাৎ দৌড় দেন।
পরে তিনি পাশের একটি আদালতকক্ষে প্রবেশ করে গায়ে থাকা সাদা শার্ট খুলে হাতে নিয়ে লাল টি-শার্ট পরা অবস্থায় প্রাঙ্গণ থেকে দ্রুত বেরিয়ে যান।
পালিয়ে যাওয়া শরিফুল ইসলাম একটি আলোচিত হত্যা মামলার আসামি। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি রাজধানীর খিলগাঁওয়ের সিপাহীবাগে আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াতে গিয়ে নিখোঁজ হয় স্কুলছাত্র জিসান হোসেন। পরদিন ভোরে পরিবারের মোবাইলে মুক্তিপণের জন্য ১৫ লাখ টাকা চেয়ে বার্তা ও ফোন আসে। এরপর ২৩ জানুয়ারি তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
জিসানের মরদেহ পাওয়া যায় বাড্ডার আফতাবনগরের একটি মাছের খামারে। কোমরে মাফলার দিয়ে বাঁধা চারটি ইটসহ পানিতে ফেলে গুম করার চেষ্টা করা হয়। র্যাব তদন্তে শাহিন মিয়া ও শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে এবং তারা জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
২০১৮ সালের ২৪ জানুয়ারি নিহত জিসানের বাবা মোফাজ্জল হোসেন খিলগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ দুইজনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হয়।
মামলাটি বর্তমানে ঢাকার ৩য় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালতে বিচারাধীন। বৃহস্পতিবার ছিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন। কাশিমপুর কারাগার থেকে আসামিদের হাজির করা হয়। আদালতে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ও ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জাকির হোসেন টিপু সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার পথে পালিয়ে যান শরিফুল। তার এই নাটকীয় পালিয়ে যাওয়া নিয়ে আদালত এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ