শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:৩৭, ১৮ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১৫:১১, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে এই চিত্র উঠে এসেছে।
রমজান মাসে তুলনামূলক কম দামে সবজি কিনতে পারলেও ঈদের পর থেকে বাজারে প্রায় সকল প্রকার সবজির দাম বেড়েছে। আজকের বাজারে প্রতি কেজি শিম ৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকা, মুলা ৬০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, কাঁকরোল ১৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৮০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা, ধুন্দুল ১০০ টাকা, ঝিঙা ১০০ টাকা, বেগুন (গোল) ১০০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ৮০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জালি প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা এবং লেবু মানভেদে প্রতি হালি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু প্রতি কেজি ৩৫ টাকা এবং গাজর ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচার এক সবজি বিক্রেতা দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন। তিনি জানান, মৌসুম প্রায় শেষ হওয়ায় বাজারে সবজির সরবরাহ কম, যার কারণে দাম বেড়েছে।
মৌসুম শেষ না হতেই পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। কারওয়ান বাজারে গতকাল পাইকারিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৫১ টাকা কেজি, যা তিন থেকে চার দিন আগে ৪৪-৪৫ টাকা ছিল। গত এক সপ্তাহে রাজধানীসহ দেশের বাজারগুলোতে খুচরায় প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ ৩০-৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও, গতকাল বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বাজারে তা ৪৫-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
পেঁয়াজের ভরা মৌসুমে এই মূল্যবৃদ্ধি সরকারের বাজার নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ক্রেতা ও বাজার বিশ্লেষকেরা। তাদের মতে, বর্তমানে পেঁয়াজের সরবরাহে সংকট হওয়ার কোনো কারণ নেই। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কিছু ব্যবসায়ী আমদানির সুযোগ নিতে চাইছে, যার ফলে বাজারে দাম বাড়ছে।
পেঁয়াজের পাশাপাশি চলতি সপ্তাহে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দামও। মিল মালিকেরা এক ধাক্কায় সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ থেকে ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করেছেন। যদিও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় শীঘ্রই তেলের দাম কমানোর আশ্বাস দিয়েছে।
সেগুনবাগিচার এক তেল বিক্রেতা জানান, ইতিমধ্যে বর্ধিত মূল্যের তেল বাজারে আসতে শুরু করেছে। অনেক দোকানে আগের দামের তেলের মজুদ থাকায় তারা নতুন দামের তেল রাখছেন না। তবে আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব দোকানেই নতুন দামের তেল পাওয়া যাবে।
চালের বাজার:
দেশের বাজারে চালের দাম নতুন করে বাড়েনি, আগের দামেই স্থির রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগামী সপ্তাহ থেকে চালের দাম কমতে শুরু করবে। রাজধানীর বাজারগুলোতে বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি নাজিরশাইল, মিনিকেট, জিরাশাইলসহ সরু চাল ৭৪-৮৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিআর আঠাশ, পাইজামসহ মাঝারি মানের চালের দাম ৬২-৭০ টাকা এবং স্বর্ণা, গুটিসহ মোটা চাল ৫৪-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ রাইস মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি ও বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী কাউসার আলম বাবু বলেন, এখনো নতুন ধানের চাল বাজারে আসেনি, তাই দাম স্থিতিশীল আছে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী সপ্তাহ থেকেই চালের দাম কমতে শুরু করবে। তারা আশা করছেন, পূর্ণ মৌসুম শুরু হলে চালের দাম কেজিতে ১০-১২ টাকা কমতে পারে।
মুরগির বাজার:
বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম কমেছে। গতকাল প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২২০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত মাসের শেষে ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি এবং সোনালি মুরগির দাম ছিল ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা কেজি। অর্থাৎ, কেজিতে দাম কমেছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
ঢাকা এক্সপ্রেস/বিডি