শিরোনাম
অর্থ বাণিজ্য ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) সম্প্রতি এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির বিভিন্ন সূচকের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, যা ২০২৫ বেসিক স্ট্যাটিসটিকস নামে পরিচিত। সেখানে বাংলাদেশের এই চিত্র পাওয়া গেছে। ৪৬টি দেশের জিডিপির আকারের হিসাব দিয়েছে এডিবি। তবে সেই তালিকায় জাপান নেই।
এডিবির পরিসংখ্যান অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ায় এখন ভারতের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।
একটি দেশের অভ্যন্তরে পণ্য ও সেবা উৎপাদন করতে গিয়ে যে পরিমাণ অর্থের মূল্য সংযোজন করে, তা জিডিপি দিয়ে প্রকাশ করা হয়। উদাহরণ হলো, তৈরি পোশাক বানাতে কাঁচামাল আমদানি বা উৎপাদন পর্যায় থেকে শুরু করে পণ্যটি বানানোর পর ক্রেতার হাতে পৌঁছাতে প্রতিটি ধাপে যত অর্থ মূল্য সংযোজন হচ্ছে, তা-ই জিডিপিতে যুক্ত হয়। এভাবেই সব পণ্য ও সেবা জিডিপিতে যুক্ত হচ্ছে।
কৃষি, শিল্প ও সেবা-এই তিন উপখাত দিয়ে জিডিপি গণনা করা হয়। তবে দেশের বাইরের আয়, যেমন প্রবাসী আয় জিডিপিতে যুক্ত হয় না। জিডিপির সঙ্গে প্রবাসী আয় যুক্ত হলে তা মোট জাতীয় আয় (জিএনআই) হয়। জিএনআই–কে দেশের জনসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে মাথাপিছু আয় বের করা হয়, জিডিপি দিয়ে নয়।
এডিবির পরিসংখ্যান অনুসারে, অর্থনীতির আকারের দিক থেকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে চীন, ভারত, কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তাইপে, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন।
এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ চীন। চীনের জিডিপির আকার ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ভারতের জিডিপির আকার ৩ লাখ ৯১ হাজার ১৪০ কোটি ডলার। তৃতীয় স্থানে থাকা কোরিয়ার জিডিপি হলো ১ লাখ ৮৬ হাজার ৯৫০ কোটি ডলারের।
এ ছাড়া বাংলাদেশের ওপর থাকা অন্য দেশগুলোর জিডিপির আকার হলো, ইন্দোনেশিয়া ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার, তাইপে ৭৯ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার; থাইল্যান্ড ৫৪ হাজার ৫০ কোটি ডলার, ভিয়েতনাম ৪৭ হাজার ৬৩০ কোটি ডলার ও ফিলিপাইন ৪৬ হাজার ১৪০ কোটি ডলার।
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকারের ভিত্তিতে এ হিসাব করা হয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপির আকার এখন ৪৫০ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বা ৪৫ হাজার ৫০ কোটি ডলার। এটি ২০২৪ সালের হিসাবের ভিত্তিতে করা। জাপানকে এই তালিকায় রাখা হলে বাংলাদেশের অবস্থান অবশ্য একধাপ নিচে নেমে আসবে।
এডিবির প্রতিবেদন অনুসারে, বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে দেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। মজার ব্যাপার হলো, এশিয়ার শীর্ষ অর্থনীতির দুই দেশ চীন ও ভারত এই দারিদ্র্যসীমার বিষয়ে কোনো তথ্যই প্রকাশ করেনি।
গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভিয়েতনামের জিডিপি বাংলাদেশের চেয়ে সামান্য বেশি, ৪৭৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। দেশটির মুল্যস্ফীতির হার ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং দেশটির মাত্র ৩ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ জাতীয় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। ২০২৪ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ১, যেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪ দশমিক ২। কেবল তা-ই নয়, এই শীর্ষ ৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে কম।
এডিপির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ছিল ৭১ দশমিক ১৯৫ বিলিয়ন ডলার, মোট জাতীয় উৎপাদনের (জিএনআই-২০২৩) ১২ দশমিক ৬ শতাংশ।