ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

১০ আষাঢ় ১৪৩২, ২৭ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

কাতারকে ধন্যবাদ জানাল ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৬:২২, ২৪ জুন ২০২৫

কাতারকে ধন্যবাদ জানাল ইরান

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার পারদ যখন চূড়ায়, তখনই ঘটল এক কূটনৈতিক বক্ররেখা। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুহাম্মদ বিন আবদুল আজিজ আল-খুলাইফিকে টেলিফোন করে ‘মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা হ্রাসে গঠনমূলক ভূমিকা’ রাখার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মাজিদ তাখত-রাভানচি। ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা ইয়াং জার্নালিস্ট ক্লাবের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে আল-জাজিরা।

তাখত-রাভানচি বলেন, ‘ইরান চায় প্রতিবেশী কাতারের সঙ্গে সর্বোচ্চ পারস্পরিক স্বার্থ এবং সুসম্পর্কের ভিত্তিতে সম্পর্ক আরও জোরদার হোক।’

ঘটনার পটভূমি: কূটনৈতিক সৌজন্য না দ্বৈত বার্তা?

এই বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা আগেই মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে বড়সড় একটি ঘটনা ঘটে গেছে। কাতারে অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটি আল-উদেইদে ইরান সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যার দাবি তেহরান জানিয়েছে “পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রতিশোধ” হিসেবে। এই হামলার ঘটনায় কাতার সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং দোহায় নিযুক্ত ইরানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান হয়তো একদিকে সামরিক বার্তা দিচ্ছে, অন্যদিকে কূটনৈতিক পথ উন্মুক্ত রাখতে চাইছে। আর কাতার—মধ্যস্থতাকারী হিসেবে পরিচিত একটি দেশ—একদিকে নিজ ভূমিতে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখে, অন্যদিকে প্রতিবেশী ইরানের সঙ্গে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়।

কাতারের দ্বৈত ভূমিকায় বিশ্ব দৃষ্টি

গত কয়েক বছর ধরেই কাতার মধ্যপ্রাচ্যে একটি সক্রিয় মধ্যস্থতাকারী শক্তি হিসেবে পরিচিত। আফগান তালেবানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা থেকে শুরু করে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল উত্তেজনা হোক কিংবা ইরান-সৌদি আরবের সম্পর্কোন্নয়ন—সব ক্ষেত্রেই কাতারের দোহা ছিল কৌশলগত আলোচনার কেন্দ্র।

তবে এবার, কাতারে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার জের ধরে কাতারের কূটনৈতিক ভূমিকায় চাপ সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে ওয়াশিংটনের কাছে প্রশ্ন, তারা কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে? অন্যদিকে তেহরানকে কূটনৈতিক বার্তা দিতে হয়েছে—ঘাঁটিতে হামলা কাতারের বিরুদ্ধে নয়।

বিশ্লেষণ: সম্পর্ক জোরদার না সমীকরণ রক্ষার চেষ্টা?

তেহরান থেকে আসা এই ধন্যবাদ বার্তা এক অর্থে রাজনৈতিক কৌশলও হতে পারে। ইরান দেখাতে চায়, তারা শুধুমাত্র সামরিক নয়, কূটনৈতিক চ্যানেলও খোলা রাখছে। কাতারকেও মনে করিয়ে দিচ্ছে—তাদের বন্ধুত্ব ‘মূল্যবান’।

তবে প্রশ্ন রয়ে যায়—

-কাতার কি এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষতার ভারসাম্য রাখতে পারবে?

-যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান, দুই পক্ষের চাপের মুখে কাতারের ‘নরম শক্তি’ ভূমিকা কতদূর কার্যকর হবে?

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ

আরও পড়ুন