ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

১২ আষাঢ় ১৪৩২, ২৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

নিঃশব্দ জলছবি: মলি বড়ুয়ার কবিতার গভীর পাঠ

কৃষ্ণকান্ত চক্রবর্তী

প্রকাশ: ১৮:৪১, ৬ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৪৯, ৬ মে ২০২৫

নিঃশব্দ জলছবি: মলি বড়ুয়ার কবিতার গভীর পাঠ

‘নিঃশব্দ জলছবি’ কবি মলি বড়ুয়া-র দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ। এর গভীরতা, পরিপক্বতা এবং অনুভবের বিস্তার চমকে দেয়। কবিতার প্রতিটি পংক্তিতে যেমন ব্যক্তিগত যন্ত্রণার স্বর, তেমনি ফুটে উঠেছে জাতিগত স্মৃতি, প্রাকৃতিক ভালোবাসা, সামাজিক চেতনা এবং আত্মার সন্ধান। এই বইটি যেন আত্মার সঙ্গে এক মৃদু কথোপকথন—একধরনের নীরব কিন্তু গহীন আর্তি।

মাটি আমার মা, জেনে নিও, অসাম্প্রদায়িকতা, পূর্বপুরুষরাও এ পথে হেঁটেছিল ইত্যাদি কবিতাগুলো নিছক সাহিত্য নয়—এগুলো হয়ে উঠেছে সময় ও সমাজের প্রতি একধরনের জবাব। অন্যদিকে তোমার নামে, প্রেমাতাল, তারাভরা রাত বা এসো দেখো কবিতাগুলো হৃদয়ের অন্তর্গত আবেগ ও প্রেমের বহুমাত্রিক রূপকে প্রকাশ করে। মলি’র কবিতায় প্রকৃতি, প্রেম ও প্রতিবাদের চিত্র পাশাপাশি অবস্থান করে।

তার শব্দচয়ন কাব্যিক, তবে জটিল নয়। প্রতিটি চিত্র যেন রঙতুলির মতো একেকটি জলছবি হয়ে ওঠে পাঠকের মনে—শান্ত, গভীর এবং অর্থবহ। চট্টগ্রামের মেঘেরা বা শরতের কথা মনে পড়ে কবিতাগুলো স্থানিক আবেগ ও স্মৃতির অনুপম চিত্র তুলে ধরেছে। বিশেষ করে, ‘বাংলার শপথ’ এবং ‘আশীর্বাদ’ কবিতাগুলোতে পাওয়া যায় এক অন্তর্মুখী শক্তি ও আত্মিক দায়বদ্ধতা, যা বাংলা কবিতার পরম্পরার সঙ্গে একাত্মতা রাখে।

তাঁর কবিতা আত্মমগ্ন হলেও আত্মকেন্দ্রিক নয়, বরং তা পাঠকের সঙ্গে সংলাপ সৃষ্টি করে—মনের গভীরে গেঁথে যায়। ‘নিঃশব্দ জলছবি’ শুধু কবিতার বই নয়; এটি এক মননের দলিল। আত্মপরিচয়ের খোঁজে, প্রিয়জনের অপেক্ষায়, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতায় ও প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় আত্মীয়তায় গাঁথা এই বই বাংলা কবিতার পাঠকদের জন্য এক অনন্য পাঠানন্দের উৎস। এর আগে তার সমাজ-বাস্তবতা ও অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে প্রতিবাদী ভাষায় প্রথম কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।

 

ঢাকা এক্সপ্রেস/ এসএ 

আরও পড়ুন