শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১:১৮, ২৪ জুন ২০২৫ | আপডেট: ২২:২১, ২৪ জুন ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম জানিয়েছেন, আহত যোদ্ধাদের জন্য তিনটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে— গুরুতর আহত, আংশিক অক্ষম এবং চিকিৎসার পর সুস্থ— যাদের যথাক্রমে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী তাদের মাসিক ভাতা এবং এককালীন সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে পরিচয়পত্র, প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসনের সুযোগও পাচ্ছেন তাঁরা।
‘এ’ ক্যাটাগরিতে রয়েছেন সেই যোদ্ধারা, যারা চিকিৎসার পরও একা চলাফেরা করতে অক্ষম— যেমন দুই চোখ হারানো বা গুরুতর অঙ্গহানি। তাঁদের এককালীন ৫ লাখ টাকা ও প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। ‘বি’ ক্যাটাগরির যোদ্ধারা এক পা বা চোখ হারালেও আংশিকভাবে স্বাভাবিক চলাচল করতে সক্ষম। তাঁরা পাচ্ছেন এককালীন ৩ লাখ টাকা এবং মাসে ১৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে, চিকিৎসার পর যারা সুস্থ হয়েছেন, তারা ‘সি’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত। এই তালিকায় রয়েছেন ১০ হাজার ৬৪২ জন। তাঁরা এককালীন ১ লাখ টাকা পেয়েছেন এবং মাসে ১০ হাজার টাকা করে পাবেন।
অন্যদিকে, সরকার ইতিমধ্যেই ৮৩৪ জন ‘জুলাই শহীদ’-এর তালিকা চূড়ান্ত করেছে। প্রতিটি শহীদ পরিবার এককালীন ৩০ লাখ টাকা পাবে, যার মধ্যে ১০ লাখ ইতোমধ্যে জাতীয় সঞ্চয়পত্র আকারে দেওয়া হয়েছে। বাকি ২০ লাখ দেওয়া হবে আগামী অর্থবছরে। পাশাপাশি শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য রয়েছে মাসিক ২০ হাজার টাকার ভাতা ও সরকারি-আধাসরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার।
ফারুক-ই-আজম বলেন, অনেক আহত যোদ্ধাকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে, বিশেষ করে গুরুতর আহত ৭ জনকে ইতিমধ্যে তুরস্কে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ১৩৪টি শহীদ পরিবার এখনো ওয়ারিশ জটিলতার কারণে অর্থ পাননি, তবে বিষয়টি দ্রুত সমাধানের জন্য কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন, যেসব ভুল-ভ্রান্তি বা অভিযোগ এসেছে, সেগুলো তদন্তের মাধ্যমে সমাধান করা হচ্ছে। পাশাপাশি যোদ্ধাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান ও ব্যবসায়িক পুনর্বাসনের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সরকার জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দিনটিকে জাতীয় দিবসের মর্যাদায় পালন করা হবে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের তালিকা করতে যেখানে ৫৪ বছর লেগেছে, সেখানে আমরা মাত্র কয়েক মাসে চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করতে সক্ষম হয়েছি। এটি সরকারের আন্তরিকতা ও দায়িত্ববোধেরই প্রমাণ।”
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ