ঢাকা, রোববার, ১১ মে ২০২৫

২৭ বৈশাখ ১৪৩২, ১২ জ্বিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করে প্রকাশ: আসিফ নজরুল
Scroll
যুদ্ধবিরতির পরেও উত্তপ্ত কাশ্মীর, একাধিক শহরে ব্ল্যাকআউট
Scroll
আ. লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ: আসিফ নজরুল
Scroll
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘণ্টা না যেতেই কাশ্মীরে বিস্ফোরণ!
Scroll
পতিতদের পুনর্বাসন চায় না জনগণ : তারেক রহমান
Scroll
ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে সম্মত: ট্রাম্প
Scroll
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে কাজ করছে ইন্টারপোল: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Scroll
পাকিস্তানের তিন বিমানঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, পাল্টা হামলা ইসলামাবাদের
Scroll
পারমাণবিক অস্ত্রের অথরিটির সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ
Scroll
মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তার সম্পদের ৯৯ শতাংশ দান করে দেবেন
Scroll
নারী ফুটবল বিশ্বকাপের ২০৩১ সালের আসরে বাড়ছে ১৬ দল

কবিগুরুর ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১:০৪, ৮ মে ২০২৫ | আপডেট: ১৩:২২, ৮ মে ২০২৫

কবিগুরুর ১৬৪তম জন্মজয়ন্তী আজ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ছবি: সংগৃহীত

আজ ২৫ বৈশাখ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম আবির্ভাব দিবস। ব্রিটিশ ভারতের কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে তার জন্ম ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ।

কবিগুরু ছিলেন বাবা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মা সারদাসুন্দরী দেবীর চতুর্দশ সন্তান। তিনি অনন্য সব সৃষ্টি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প ও অসংখ্য গানের মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে পৌঁছে দিয়েছেন বিশ্বের কাছে। এবারের রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর প্রতিপাদ্য-‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’।

জন্মদিন নিয়ে বেশ কিছু কবিতা লিখেছিলেন কবিগুরু। তার একটি- ‘জন্মদিন আসে বারে বারে/মনে করাবারে-/এ জীবন নিত্যই নূতন/প্রতি প্রাতে আলোকিত/পুলকিত দিনের মতন।’ এ ছাড়া- ‘মোর চিত্ত-মাঝে? চির-নূতনের দিল ডাক/ পঁচিশে বৈশাখ’ এই চরণগুলো তো খুবই পরিচিত। 

আজ আবার ফিরে এল কবির জন্মদিন। কবির হৃদয়ে জন্মদিন আর নূতনের ডাক দিয়ে যাবে না, তবে তার অসংখ্য অনুরাগীর মনে জাগাবে জীর্ণ পুরাতনকে ঝেড়ে ফেলে নূতনকে আহ্বান জানানোর প্রেরণা। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তার গান ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ আমাদের জাতীয় সংগীত।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা লেখা শুরু করেন আট বছর বয়সে। ১৮৯১ সাল থেকে বাবার আদেশে নদিয়া, পাবনা, রাজশাহী ও ওড়িশার জমিদারি তদারকি শুরু করেন। কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে তিনি দীর্ঘসময় অতিবাহিত করেন। ১৯০১ সালে সপরিবারে চলে আসেন বীরভূমের বোলপুর শহরের উপকণ্ঠে শান্তিনিকেতনে। তার জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়েছে ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ এবং অন্যান্য গদ্য সংকলন। 

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ নোবেল বিজয়ী এই সহিত্য প্রতিভাকে স্মরণ করবে তার অগণিত ভক্ত। এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান কুষ্টিয়ার শিলাইদহে অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া বিশ্বকবির স্মৃতিবিজড়িত নওগাঁর পতিসর, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর এবং খুলনার দক্ষিণডিহি ও পিঠাভোগেও রবীন্দ্রমেলা, রবীন্দ্রবিষয়ক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জন্মবার্ষিকী উদ্‌যাপিত হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকার বিভিন্ন সড়কদ্বীপ এবং সব জেলায় বিশ্বকবির ছবি, কবিতা, পরিচিতি ও চিত্রকর্ম প্রদর্শন করা হবে। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিনদিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিশ্বকবির ওপর নির্মিত ডকুমেন্টারি ও চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। বাংলা একাডেমি ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন দপ্তরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বাঙালির আবেগ অনুভবের মহত্তম প্রকাশ ঘটেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনায়। কবিতা, গান, ছড়া, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ভ্রমণ, শিশুতোষ, পত্র, নাটকসহ সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় তার অজস্র রচনা বাংলা সাহিত্যকে করেছে ঐশ্বর্যমণ্ডিত। রচনাকর্ম ছাড়াও তার চিত্রকলা নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে উপমহাদেশের চারুকলা চর্চায়। কালজয়ী তার এসব সৃজনসম্ভার যুগে যুগে মানুষের মানবিক মূল্যবোধের বিকাশে, অন্যায়ের প্রতিবাদে, দেশপ্রেমে, সত্য ও কল্যাণের পথে নির্ভীক-নিঃশঙ্ক চিত্তে এগিয়ে যেতে প্রেরণা জুগিয়ে চলেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে তার গান অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল আমাদের।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেবল তার সৃজনকর্মে অনুপ্রেরণা দিয়েই ক্ষান্ত হননি। নিজেও অন্যায়–অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। জালিয়ানওয়ালাবাগে ব্রিটিশ শাসকদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তাদের দেওয়া নাইটহুড উপাধি বর্জন করেছিলেন, যা ছিল সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে অকল্পনীয়। এসব কারণে তিনি গণমানুষের কাছে প্রিয় ও চির নূতন হয়ে আছেন।

সৃজনকর্ম ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শিক্ষা, কৃষি, গ্রামীণ অর্থনীতি ও সমাজকল্যাণমূলক কর্মপরিধিও বিপুল এবং গভীর তাৎপর্যময়। পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্যতিক্রমী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন, পূর্ববঙ্গের শাহজাদপুর, পতিসরে কৃষকদের মধ্যে ক্ষুদ্রঋণ প্রবর্তনসহ তার ভিন্নমাত্রার বহুবিধ কর্ম উদ্যোগ সমীহ জাগানিয়া হয়ে আছে। কবির দীর্ঘ ৮০ বছরের কর্মময় জীবনের অবসান ঘটেছিল ১৩৪৮ সনের বাইশে শ্রাবণ।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন