ঢাকা, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫

২১ বৈশাখ ১৪৩২, ০৬ জ্বিলকদ ১৪৪৬

শিরোনাম

Scroll
গাজীপুরের চান্দানায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ
Scroll
ভারতের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে যাচ্ছে পাকিস্তান
Scroll
গাজীপুরে হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলা
Scroll
জামায়াতের সাবেক নেতা ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক মারা গেছেন
Scroll
‘মানবিক করিডর’ বিষয়ে সরকার কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করেনি বলে জানিয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান
Scroll
স্থায়ী ক্যাম্পাস না থাকায় বেসরকারি ১৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইউজিসি
Scroll
সৌদি আরব পৌঁছেছেন ২২ হাজার ২০৩ জন হজযাত্রী, আরো একজনের মৃত্যু
Scroll
নির্বাচন কবে— বিএনপির কাছে জানতে চেয়েছে রাশিয়া: আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী
Scroll
সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বাড়ি থেকে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ৫ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
Scroll
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ হ্যাক, সতর্ক থাকার আহ্বান
Scroll
পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে ভারত, এলওসি বরাবর ভয়াবহ সংঘর্ষ

গুরুত্বপূর্ণ যেসব দাবি উত্থাপন করলেন তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬:৩৫, ২ মে ২০২৫

গুরুত্বপূর্ণ যেসব দাবি উত্থাপন করলেন তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিরাজনীতিকরণ দেশের গণতন্ত্রের জন্য এক গভীর হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। নির্বাচন বিষয়ে কেন সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে? এর ফলে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা উচিত এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের সামনে আনার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।

শুক্রবার (২ মে) আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

পাঁচ আগস্টের পর রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া নতুন ২৫টি দলকে স্বাগত জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, আদর্শের ভিন্নতা থাকতে পারে, তবে দেশের স্বার্থে সব দল এক হয়ে কাজ করবে, এমন প্রত্যাশা আমরা রাখি।

পতিত স্বৈরাচারের পুনরুত্থান নিয়ে উদ্বেগ

তারেক রহমান পতিত স্বৈরাচারের পুনরুত্থান নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে? যদি বর্তমান সরকার ব্যবস্থা না নেয়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকার অবশ্যই স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

রাজনৈতিক সংস্কারের আহ্বান

তারেক রহমান বলেছেন, দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দলই রাজনৈতিক সংস্কারের পক্ষে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে অবজ্ঞা করলে তা দেশকে বিরাজনীতিকরণের দিকে ঠেলে দেবে। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাজনৈতিক দলগুলোর জনগণের আদালতে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানান।

নির্বাচনের দাবি

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময় জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি চেয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যে, নির্বাচনের দাবি জানানোও যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, দেশের স্বার্থের প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দলের অবস্থান এক ও অভিন্ন। ব্লেইম গেম দিয়ে এ সরকারের দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। নতুন যে সরকার গঠিত হবে, তারা পলাতক স্বৈরাচারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

জনগণের আদালতের মুখোমুখি

রাজনৈতিক দলগুলোকে জনগণের আদালতের মুখোমুখি করার উদ্যোগ নিতে হবে। এই উদ্যোগ নিতে হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে। ভোটের মাধ্যমে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সংসদ...সরকার গঠিত হলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুসংহত থাকবে। রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে সরকার গঠন এবং পরিবর্তনে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো অভ্যস্ত হয়ে উঠলে বাংলাদেশকে আর কেউ তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করে রাখতে পারবে না।

নতুন দলগুলোকে স্বাগত

নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী শাসনের পতনের পর এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২৫টি নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করেছে। রাজনীতির ময়দানে আমরা তাদের স্বাগত জানাই। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, দেশের স্বার্থের প্রশ্নে বাংলাদেশের পক্ষের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান এক ও অভিন্ন। উদ্দেশ্য এবং গন্তব্য এক ও অভিন্ন। কী সেটি? সেটি হলো, দেশের স্বার্থ রক্ষা এবং অবশ্যই জনগণের কল্যাণ সাধন। তবে যে রাজনৈতিক দলটি গণতন্ত্র হারিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসনের জন্ম দিয়েছিল, মানুষের অধিকার হরণ করেছিল, গুম-খুন-অপরাধে জড়িয়ে পড়েছিল, বাংলাদেশকে একটি তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল, গণঅভ্যুত্থানে তারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। গণতন্ত্রকামী জনগণ দেশের স্বার্থবিরোধী অপশক্তিকে কখনোই মেনে নেবে না।

দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সংবিধান লঙ্ঘন করে পলাতক স্বৈরাচার জনগণের ভোট ছাড়াই তিনবার অবৈধ সরকার গঠন করে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ আজ জানতে চায়, সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের আগামী দিনের রাজনীতিতে অপ্রাসঙ্গিক করে দিতে অন্তর্বর্তী সরকার কী পদক্ষেপ নিয়েছে। ব্লেইম গেম দিয়ে কিন্তু দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই। অন্তর্বর্তী সরকার পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার আগামী দিনে অবশ্যই সংবিধান লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

পলাতক স্বৈরাচারের জন্য সুবর্ন সুযোগ

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হতে পারে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে যারা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছেন তাদের বলতে চাই, লুটপাট ও দুর্নীতির শত শত কোটি টাকা হাতে নিয়ে সারা দেশের স্বৈরাচারের দোসররা পুনর্বাসিত হওয়ার অপেক্ষায়। স্থানীয় নির্বাচন পলাতক স্বৈরাচারের জন্য পুনর্বাসিত হওয়ার একটি সুবর্ন সুযোগ। যারা বলেছেন তারা হয়তো এই বিষয়টি বিবেচনা করেননি। আমি অনুরোধ করবো, বিষয়টিকে বিবেচনা করার জন্য।

তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার দুঃসাহস

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রকামী জনগণের স্বাধীনতার বার্তা উপেক্ষা করে পতিত স্বৈরাচার দীর্ঘ দেড় দশক স্বাধীন বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। ভবিষ্যতে আর কেউ যেন বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার দুঃসাহস না দেখায়, পরাজিত অপশক্তি ও তাদের দোসররা যাতে আর মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেটিই হোক বাংলাদেশের আজ এবং আগামী দিনের রাজনৈতিক বন্দবস্ত। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায় নিশ্চিত করা না গেলে শেষ পর্যন্ত কোনও সংস্কারই হয়তো টেকসই হবে না। এ কারণেই রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুণগত সংস্কার এবং নাগরিকদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে জনগণের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, জাতীয় সংসদ ও সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে আসছে বিএনপি।

দেশের প্রতিটি দল সংস্কারের পক্ষে

তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দল নির্বাচনের দাবি জানাবে এটাই স্বাভাবিক ও গণতান্ত্রিক রীতি। অথচ গত কিছুদিন ধরে সুকৌশলে দেশে এমন একটি আবহ তৈরির প্রচেষ্টা চলছে, যেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানানোই যেন এক অপরাধ! জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অবজ্ঞাসূচক বক্তব্য-মন্তব্য কিন্তু পলাতক স্বৈরাচারকে আন্দন্দ দেয়। অপরপক্ষে এটি গণতন্ত্রকামী জনগণের জন্য অপমানজনক। রাষ্ট্র-রাজনীতি মেরামতের জন্য সংস্কারের কর্মযজ্ঞ চলছে। তবে চলমান সংস্কার যদি রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি অবজ্ঞা করে তাহলে সংস্কারের তাৎপর্যটা কী? এটি বহু মানুষের প্রশ্ন আজ।

তারেক রহমান বলেন, দেশের প্রতিটি দল সংস্কারের পক্ষে। তারপরও সংস্কার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার কেন এতো সময়ক্ষেপণ করছে। এ নিয়েও জনগণের মনে ধীরে ধীরে প্রশ্ন বেড়ে চলেছে।

আরও বক্তব্য রাখেন

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন– বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, গণআধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হকসহ এবি পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।

 

আরও পড়ুন