শিরোনাম
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩:২৯, ২৭ জুলাই ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে তিন ফুট উঁচু জোয়ারের পানিতে দ্বীপের বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। এতে দ্বীপের ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়া কক্সবাজারের সমুদ্র তীরে ব্যাপক ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। গত দুইদিনে সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে ডায়াবেটিস হাসপাতাল ও চরপাড়া এলাকায় সৃজিত থাকা শতাধিক ঝাউগাছ সাগরে তলিয়ে গেছে। এসময় কলাতলি থেকে টেকনাফ পর্যন্ত স্থানে মেরিন ড্রাইভের ১০ টির বেশি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়া উচ্চ জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপের বেশ কিছু অংশ। সেই সঙ্গে সামুদ্রিক জোয়ারের পানির তোড়ে কক্সবাজার-টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কে ঢেউ উপছে পড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে ১০টির বেশি অংশে। সাগর প্রচণ্ড উত্তাল থাকায় সেন্টমার্টিনের সঙ্গে বন্ধ রয়েছে নৌ যোগাযোগ।
শুক্রবার থেকে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন-চার ফুট বৃদ্ধি পেয়ে কক্সবাজারের বিস্তীর্ণ উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে চারটি ইউনিয়নের ৪০টি গ্রাম।
স্থানীয় বিএনপি নেতা এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী জানান, এক বছর ধরে বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজের জন্য জেলা প্রশাসককে দাবি জানিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসক সালাহ উদ্দিন কক্সবাজার যোগ দানের দীর্ঘ এক বছরেও কুতুবদিয়া সফর করেনি।
সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়জুল ইসলাম বলেন, অমাবস্যার কারণে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উচ্চতায় প্লাবিত হচ্ছে। এতে দ্বীপের বেশ কয়েকটি এলাকায় ঘরবাড়িতে নোনা পানি ঢুকে পড়েছে। তিনি বলেন, শক্তিশালী ঢেউয়ের আঘাতে দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন শুরু হয়েছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভাঙন আরো বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের কারণে সাগর উত্তাল রয়েছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
স্থানীয় বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত ফুরিয়ে আসছে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দ্রুত টেকনাফ থেকে খাদ্যপণ্য না পৌঁছালে তীব্র সংকট দেখা দেবে। আমরা দ্বীপবাসীর কথা চিন্তা করে জরুরি ভিত্তিতে সি-ট্রাক ও সি-অ্যাম্বুলেন্স চালুর দাবি জানাচ্ছি।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নৌযান চলাচল পুনরায় শুরু হবে।
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রশিদ বলেন, টেকনাফ নৌ-ঘাট থেকে কোনো সার্ভিস ট্রলার বা পণ্যবাহী নৌযান ছাড়তে পারছে না। উত্তাল সাগরে যাত্রী ও মালামাল পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় উপজেলা প্রশাসনই এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ