ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

৪ আষাঢ় ১৪৩২, ২১ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

মেঘনা নদীতে ভাসছে গরু-মহিষের মৃতদেহ 

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি 

প্রকাশ: ১৬:১২, ৩১ মে ২০২৫

মেঘনা নদীতে ভাসছে গরু-মহিষের মৃতদেহ 

নদীতে ভাসছে মৃত গবাদিপশু। ছবি: ঢাকা এক্সপ্রেস 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে জোয়ারের পানি বেড়েছে। এতে নদীর মাঝামাঝি ও আশপাশের চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানির প্রবল ঢেউ আর স্রোতে চরের বহু গরু-মহিষ ভেসে গেছে। শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকায় অন্তত আটটি গরু ও মহিষের মৃতদেহ নদীতে ভাসতে দেখা যায় বলে জানান স্থানীয়রা। 

তারা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে হঠাৎ জোয়ারের তোড়ে আশপাশের চরাঞ্চলে থাকা গরু-মহিষ হারিয়ে যায়। কিছু মহিষ পানির স্রোতে ভেসে তীরে চলে এলে স্থানীয়রা সেগুলো উদ্ধার করেন। তবে বৃহস্পতিবারের জোয়ারে ঠিক কতো সংখ্যক গবাদিপশুর ক্ষতি হয়েছে- সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়নি। 

নবীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মো: শাহজাহান বলেন, ‘শুক্রবার দুপুরে থেকে শুরু হওয়া জোয়ারে আমি অন্তত ২৬ টি গবাদিপশুর মৃতদেহ নদীতে ভাসতে দেখি।’ 

চরলরেঞ্চ এলাকার জেলে আবদুল কাদের জানান, শুক্রবার সকালে কমলনগরের নাছিরগঞ্জের বাত্তির খাল মাছঘাট থেকে নবীগঞ্জ পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় বেশ কয়েকটি পশুর মৃতদেহ নদীতে ভাসতে দেখা গেছে, এর মধ্যে দু’টি ছাগল ছিলো। 

স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে নবীগঞ্জ বাজার এলাকায় প্রায় ৩০ টি গরু ভেসে যায়। এর মধ্যে একটি গরু আমার ছিলো। বাকিগুলো তাদের মালিকরা শনাক্ত করে নিয়ে যান। উদ্ধারের পর অনেক গরুই অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাদের চিকিৎসা দিতে হয়েছে।’ 

তিনি জানান, এই গরুগুলো চর কাঁকড়া থেকে সাঁতরে তীরে আসে। যেগুলো জোয়ার ও ঢেউয়ের তোড়ে টিকে থাকতে পারেনি, সেগুলো পানিতে ডুবে মারা গেছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, চর কাঁকড়ায় থাকা অন্তত দুই শতাধিক গরু-মহিষ নিখোঁজ রয়েছে। 

একই এলাকার মো: মোরশেদ বলেন, ‘শুক্রবার সকালে নবীগঞ্জের কটরিলা খালে আমি ৯ টি গরুর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেছি।’ 

রামগতি উপজেলার বিচ্ছিন্ন চর ‘চর আবদুল্লাহ’ হলো জেলার সবচেয়ে বড় গরু-মহিষের বিচরণস্থল। সেখানে শত শত গবাদিপশু বাণিজ্যিকভাবে পালিত হয়। দুর্যোগের সময় এসব চরের গরু-মহিষ ঝুঁকিতে পড়ে। 

চর আবদুল্লাহর বাসিন্দা মো: আলাউদ্দিন জানান, নিম্নচাপের কারণে জোয়ারের সময় শত শত গরু-মহিষ নিখোঁজ হয়েছে। 

আরেক বাসিন্দা মো: বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমার পাশের বাড়ির এক লোকের তিনটি গরু ও তিনটি ছাগল এবং আরেকজনের দু’টি মহিষ জোয়ারে ভেসে গেছে।’ 

এ বিষয়ে জানতে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কুমুদ রঞ্জন মিত্রকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি। 

লক্ষ্মীপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবুল হোসেন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতির তথ্য আমাদের কাছে নেই। গবাদিপশু ক্ষতির বিষয়েও কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হবে।’ 

ঢাকা এক্সপ্রেস/এনএ 

আরও পড়ুন