শিরোনাম
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০২:১৭, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ১১:৪৯, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
‘টক টু আল–জাজিরা’য় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: আল–জাজিরার ভিডিও থেকে নেওয়া
শেখ হাসিনার নিজেকে প্রধানমন্ত্রী দাবি করা এবং ভারত থেকে বিভিন্ন ইস্যুতে তার দেওয়া বক্তব্য বাংলাদেশ কীভাবে দেখছে—উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘ব্যাংককে আয়োজিত বিমসটেক মিটিংয়ে এ বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে আমি তাকে স্পষ্ট করে বলেছি—আপনি যদি তাকে ভারতে রাখতে চান, তাহলে আর বিষয়টি নিষ্পত্তিযোগ্য থাকে না। তবে যেহেতু সে ভারতে আছে, সেখানে বসে তার এ ধরনের বক্তব্য দেওয়া উচিত নয়, কারণ—এগুলো আমাদের দেশে অনেক সমস্যা তৈরি করে। এসব উস্কানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সে বাংলাদেশের মানুষকে উত্তেজিত করে তুলছে, যার ফল ভুগতে হচ্ছে সরকারকে।’
তাঁর এমন বক্তব্যের পর মোদির উত্তর কী ছিল—উপস্থাপকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি যদি ঠিকঠাক স্মরণ করে থাকি, তিনি বলেছেন—ভারত এমন একটি দেশ যেখানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত। প্রত্যেকেরই নিজস্ব বাকস্বাধীনতা আছে। আমি তাতে হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’
শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচার করা সম্ভব কি না, জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি জানি না এক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়াটা কী। আমরা ইতোমধ্যে হাসিনাকে দেশে ফেরত পাঠাতে ভারতকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু, তারা কোনো জবাব দেয়নি। যখন এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে, তখন আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
শেখ হাসিনাকে ফেরত আনার বিষয়টি বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে কী প্রভাব ফেলবে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের নিজেদের সমাধান করতে হবে। আমরা আদালত থেকে আইনি নোটিশ আসার অপেক্ষা করছি।’
শেখ রেহানার মেয়ে, সাবেক ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. ইউনূস বলেন, ‘এই মামলার বিপরীতে শক্ত প্রমাণ আছে। এরই ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলাটি করেছে। এটি আদালত নির্ধারণ করবেন।’
অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের দেশে ফেরানো হবে কি না— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব, যেমনটা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে করছি।’
নির্বাচন ডিসেম্বর নাকি জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা সকল রাজনৈতিক দল ও ঐক্যমত্য কমিশনের উপর নির্ভর করছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি অধিকাংশ সংস্কারপ্রস্তাবে একমত হয় এবং সেগুলো নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে আমাদের অধিক সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে জুনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি তারা দ্রুত নির্বাচন ও স্বল্প সংস্কার চায়, তবে ডিসেম্বরে নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।’
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে কেমন নেতা দেখতে চান—এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এমন কাউকে দেখতে চাই, যিনি পুরোনো ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাবেন না, অর্থনৈতিক লুণ্ঠনের যুগে ফিরে যাবেন না। তবে, আপনি তো নেতার কাজের গ্যারান্টি দিতে পারবেন না। কিন্তু সিস্টেমের কাজের গ্যারান্টি দিতে পারবেন। তাই আমরা সিস্টেমের সংস্কারে চেষ্টা করছি।’
ঢাকা এক্সপ্রেস/এসএআর