শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২২:৫৪, ২৫ জুন ২০২৫
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি গোয়েন্দারা অন্তত ২০ জন ইরানি শীর্ষ জেনারেলকে ফোন করে বলেছিল, ১২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলের কাছে আত্মসমর্পণের ভিডিও পাঠাতে হবে। ভিডিওতে উল্লেখ করতে হবে, তাঁরা আর ইরান সরকারকে সহযোগিতা করবেন না। অন্যথায় তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করেছে, তারা এমন একটি অডিও পেয়েছে, যেখানে এক ইসরায়েলি গোয়েন্দা ইরান রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) এক জেনারেলকে বলছেন,
“আমরা আপনাকে হত্যা করব, আপনার পরিবার, সন্তানদের—সবাইকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেব। আমরা আপনার গলার শিরার চেয়েও কাছাকাছি।”
এই হুমকি ফোনগুলো ১৩ জুনের হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডার নিহত হওয়ার মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই করা হয়েছিল। ফোন দেওয়া হয় তাঁদের উত্তরসূরি হিসেবে বিবেচিত সামরিক কর্মকর্তাদের কাছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি ছিল একধরনের মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ। ইসরায়েল চেয়েছিল আতঙ্ক ও বিভ্রান্তি ছড়িয়ে ইরানের সামরিক কাঠামোতে ফাটল ধরাতে। ইরানের অভ্যন্তরে বিদ্রোহের বীজ বপনের চেষ্টা করে তারা। ফোনে হুমকির পাশাপাশি নির্দেশ দেওয়া হয় ভিডিও রেকর্ড করে টেলিগ্রামে পাঠাতে।
তবে ইসরায়েলের এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। কোনো ইরানি জেনারেল আত্মসমর্পণের ভিডিও পাঠাননি বা দেশ ছাড়েননি। বরং শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা আরও সতর্ক হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, হুমকির ধরন ছিল অত্যন্ত ব্যক্তিগত। কেউ ফোন পেয়েছেন, কেউ চিঠি, আবার কারও স্ত্রীর ফোনে হুমকি পাঠানো হয়েছে। একটি অডিও বার্তায় ইসরায়েলি গোয়েন্দা বলেন, “আপনি কি (নিহতদের) তালিকার পরবর্তী নাম হতে চান?”
বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এ ধরনের কৌশল ইসরায়েলের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কিংবা সামরিক গোয়েন্দা ইউনিট ‘আমান’-এর অংশ হতে পারে। ফারসি ভাষায় পারদর্শী এসব গোয়েন্দারা ইরানি কমান্ডারদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে ব্যর্থ হলেও তাদের মনস্তাত্ত্বিক আগ্রাসনের ধরণ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এর আগে ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করেছিল, ইসরায়েল হামলার আগে থেকেই ইরানের অভ্যন্তরে মোসাদ এজেন্টদের মোতায়েন করে হামলার ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। মাত্র ১২ দিনের সংঘর্ষে ইসরায়েল অন্তত ১৪ জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সামরিক কৌশলবিদকে হত্যার দাবি করেছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ