ঢাকা, রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

১৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন দাউদ হায়দার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১:৫০, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

না-ফেরার দেশে চলে গেলেন দাউদ হায়দার

ছবিঃ সংগৃহীত

‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’ কবিতার অমর রচয়িতা দাউদ হায়দার চলে গেলেন না-ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। জার্মানির বার্লিন শহরের একটি বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্রে শনিবার রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার অনুজ, দুই কবি জাহিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার।

আরিফ হায়দার জানান, বাংলাদেশ সময় ২৭ এপ্রিল রাত দেড়টায় দাউদ হায়দারের মৃত্যু হয়। বর্তমানে তার মরদেহ হিমঘরে রাখা হয়েছে। শেষকৃত্য সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এছাড়া কবির ভাতিজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শাওন্তী হায়দারও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২০ মিনিটে দাউদ হায়দার মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৭৪ সালে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়ার পর প্রথমে কলকাতায় কয়েক বছর কাটান দাউদ হায়দার। এরপর ১৯৮৭ সালে জার্মানিতে চলে যান এবং জীবনের বাকি সময় সেখানেই কাটান।

চিরকুমার দাউদ হায়দার দীর্ঘদিন ধরেই নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বার্লিনের বাসার সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাত পান মাথায়, এবং তখন তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও আর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি।

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় জন্মগ্রহণ করা দাউদ হায়দার ছিলেন একাধারে কবি, লেখক ও সাংবাদিক।

১৯৭৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় তার কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ প্রকাশিত হলে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। জনরোষ ও আন্দোলনের মুখে ১১ মার্চ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

২০ মে মুক্তি পেলেও নিরাপত্তাহীনতায় পড়ে পরদিনই তাকে বাংলাদেশের বাইরে পাঠানো হয়। দাউদ হায়দার নিজেই পরে লেখেন, সে সময় তার কাছে ছিল মাত্র ৬০ পয়সা, কাঁধে ঝোলানো একটি ব্যাগে ছিল কিছু কবিতার বই, দুজোড়া শার্ট-প্যান্ট, স্লিপার এবং একটি টুথব্রাশ। তার কথায়, `মৌলবাদীরা আমাকে মেরে ফেলতই; হয়তো সরকারও আমার মৃত্যু চেয়েছিল। আমার আর কোনো উপায় ছিল না।'
 

ঢাকা এক্সপ্রেস/ বিডি

আরও পড়ুন