শিরোনাম
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৫১, ১৫ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১৪:৫৪, ১৫ জুলাই ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
এমনকি অলিম্পিকে মশাল বহনের সম্মানও অর্জন করেন তিনি। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সোমবার (১৪ জুলাই) ১১৪ বছর বয়সে পাঞ্জাবের জালন্ধর-পাঠানকোট মহাসড়কে এক গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ফৌজা সিং। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও সেদিন সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ফৌজা সিং বয়সকে কখনোই বাধা মানেননি। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী ও ছেলেকে হারানোর পর জীবনের শূন্যতা কাটাতে ৮৯ বছর বয়সে দৌড়ানোকে সিরিয়াসভাবে নেওয়া শুরু করেন তিনি। ২০০০ সালে লন্ডন ম্যারাথনের মাধ্যমে তার প্রতিযোগিতামূলক দৌড়ের যাত্রা শুরু হয়।
তিনটি মহাদেশে মোট নয়টি পূর্ণ ম্যারাথনে অংশ নিয়েছেন তিনি। তার সেরা টাইমিং ছিল পাঁচ ঘণ্টা ৪০ মিনিট ৪ সেকেন্ড; যা তিনি করেন টরন্টো ম্যারাথনে।
তিনি ২০০৪ সালের অ্যাথেন্স অলিম্পিক ও ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকে অলিম্পিক মশাল বহনের সম্মানও অর্জন করেন। এমনকি একটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপনচিত্রেও তিনি ছিলেন, যেখানে ডেভিড বেকহ্যাম ও মোহাম্মদ আলীর মতো তারকারাও অংশ নিয়েছিলেন।
‘দ্য টারবেনড টর্নেডো’ নামে ফৌজা সিংয়ের জীবনী লিখেছিলেন ভারতের খ্যাতিমান লেখক খুশবন্ত সিং।
জলন্ধরের আদমপুর পুলিশ স্টেশনের হাউস অফিসার হরদেভপ্রীত সিং জানিয়েছেন, দুর্ঘটনা ঘটিয়ে গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান চালক। মাথায় মারাত্মক আঘাত পাওয়ার পর মারা যান ফৌজা সিং।
হরদেভপ্রীত সিংয়ের ভাষায়, ‘রাস্তায় হাঁটার সময় ভোগপুর থেকে আসা একটি গাড়ি তাকে আঘাত করে। মাথায় আঘাত পাওয়ায় তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং সেখানে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। অজ্ঞাতনামা সেই চালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ফৌজা সিংয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পাঞ্জাবের গভর্নর গুলাবচাঁদ কাটারিয়া। তিনি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন, সর্দার ফৌজা সিং জি-র মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। তিনি ছিলেন অদম্য সাহস ও প্রেরণার প্রতীক। মাত্র কিছু মাস আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আমি ‘নেশা মুক্ত – রঙ্গিলা পাঞ্জাব’ পদযাত্রায় তার সঙ্গে হাঁটার সৌভাগ্য লাভ করি। তখনো তার উপস্থিতি সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছিল।
ফৌজা সিংয়ের মরদেহ জালন্ধরের একটি হিমঘরে রাখা হয়েছে। দেশের বাইরে থাকা তার সন্তানরা ফিরলে শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
ব্রিটিশ–শাসিত ভারতের পাঞ্জাবের জালন্ধরের বেয়াস গ্রামে ১৯১১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ফৌজা সিং। কৃষক পরিবারে চার ভাইবোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন তিনি। নব্বইয়ের দশকে ইংল্যান্ডে পাড়ি জমালেও করোনা মহামারির সময় নিজ গ্রামে ফিরে আসেন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ