ঢাকা, শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

১৭ শ্রাবণ ১৪৩২, ০৭ সফর ১৪৪৭

নতুন করে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনুমোদন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:১৩, ১ আগস্ট ২০২৫

নতুন করে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে অনুমোদন

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের আবারও নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার। বোয়েসেল-এর মাধ্যমে এ নিয়োগ দেওয়া হবে। যারা ২০২৩ সালের ৩১ মে’র মধ্যে মালয়েশিয়ায় যেতে পারেননি, তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিতদের কনস্ট্রাকশন ও ট্যুরিজম সেক্টরে কাজের সুযোগ দেওয়া হবে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন এ তথ্য জানায়। জানানো হয়, এসব কর্মী আনার জন্য চাহিদাপত্র (ডিমান্ড লেটার) সত্যায়নের কাজ শুরু হয়েছে। এ জন্য ফরেন ওয়ার্কার্স সেন্ট্রালাইজড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এফডব্লিউসিএমএস)-এর চেকলিস্ট অনুযায়ী অনলাইনে প্রয়োজনীয় সব নথি দাখিল করতে হবে।

প্রয়োজনীয় নথির মধ্যে রয়েছে—ম্যানেজার পর্যায়ের অনুমোদনপত্র, হাইকমিশনে জমাকৃত ফি-এর ব্যাংক স্লিপ, ৪-৫ জন কর্মীর সাম্প্রতিক বেতন স্লিপ, কোম্পানির প্রোফাইল ও কর্মীর তথ্য, বিগত তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এবং প্রয়োজনীয় ব্যাংক ব্যালান্স (যেমন ১০০ কর্মীর জন্য দুই লাখ রিংগিত)।

এ ছাড়া জমা দিতে হবে—ফরেন ওয়ার্কার্স কম্পেনসেশন স্কিম (SOCSO), হাসপাতালে ভর্তির বিমা স্কিমের কাগজ, আবাসন সনদ, নির্মাণ চুক্তি, গ্যারান্টি লেটার, নিয়োগপত্র, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি, বোয়েসেল ও নিয়োগকারীর মধ্যকার চুক্তিপত্র এবং কোটার অনুমোদনপত্র।

হাইকমিশন আরো জানিয়েছে, অনলাইনে জমা দেওয়া সব মূল নথির সঙ্গে একটি ফটোকপি সেট জমা দিতে হবে দূতাবাসে।

দীর্ঘদিনের অনিশ্চয়তা ও প্রশাসনিক জটিলতা শেষে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, নিয়োগ পদ্ধতির স্বচ্ছতা, নির্ধারিত কোটা ও খরচ নিয়ন্ত্রণসহ নতুন সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী ফের কর্মী পাঠানো শুরু হতে পারে।

সূত্র বলছে, মালয়েশিয়া ‘সিলেক্টিভ রিক্রুটমেন্ট’ মডেলে যেতে চায়, যেখানে কেবল নিবন্ধিত ও সরকারি অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমেই কর্মী যাবে। এজন্য একটি খসড়া কর্মপরিকল্পনা করেছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। এতে বাংলাদেশ সরকারের কিছু সংশোধনী প্রস্তাবও আছে। বায়রা’র এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা চাই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অভিবাসন হোক, যাতে দালালদের সুযোগ না থাকে।’ তিনি জানান, বাংলাদেশ চাইছে নির্ধারিত খরচ, মেডিকেল ও ভিসার সময়সীমা এবং নিয়োগকর্তা যাচাই বাধ্যতামূলক করা হোক।

বাংলাদেশ সরকারের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ সরকার কর্মীদের শোষণের অভিযোগে তদন্ত বন্ধে সম্মত হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কুয়ালালামপুরে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বলেন, আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে একটি যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, শ্রমবাজার ধরে রাখতে হলে কেবল চুক্তি নয়, বাস্তবায়নের সময় দুর্নীতি ও অনিয়ম প্রতিরোধেও কড়া নজরদারি জরুরি।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাঁচ লাখ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্য থাকলেও অনিয়ম ও কোটা বাণিজ্যের অভিযোগে ওই প্রক্রিয়া মাঝপথেই স্থগিত হয়ে যায়।

ঢাকা এক্সপ্রেস/ইউকে

আরও পড়ুন