ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৩:২৬, ৬ আগস্ট ২০২৫ | আপডেট: ১৪:০৩, ৬ আগস্ট ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
গত বছর মিরা ওপেনএআই থেকে পদত্যাগ করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সান ফ্রান্সিসকোতে থিংকিং মেশিনস ল্যাব নামের স্টার্টআপ প্রকাশ করেন তিনি। মেটার লক্ষ্য ছিল— মিরা ও তার সহকর্মীদের নিজেদের প্রতিষ্ঠানে যুক্ত করা। বিশেষত থিংকিং মেশিনস ল্যাবের সহপ্রতিষ্ঠাতা এবং শীর্ষ গবেষক অ্যান্ড্রু টুলককে। এ জন্য জাকারবার্গ স্টার্টআপের ৫০ জন কর্মীর মধ্যে ১২ জনেরও বেশি কর্মীকে প্রলুব্ধের চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি একজনকে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে, সবাই সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন।
মিরা ও তার দল বিশ্বাস করেন, আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স (এজিআই) তৈরির দিক থেকে ওপেনএআই এবং থিংকিং মেশিনস ল্যাবই সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। তারা মনে করেন, যদি তাদের গবেষণা মেটার কাছে যায়, তা প্রধানত বিজ্ঞাপনভিত্তিক পণ্য উন্নয়নে ব্যবহৃত হবে, যা তাদের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত।
ওপেনএআইতে থাকার সময়ই মিরাকে অহংকারমুক্ত ব্যক্তি বলে জেনেছিলেন তার সহকর্মীরা। এই বৈশিষ্ট্য তিনি থিংকিং মেশিনস ল্যাবেও বজায় রেখেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠানে সমতাভিত্তিক, অহংকারহীন ও সহযোগিতামূলক সংস্কৃতি তৈরি করেছেন। মিরার স্টার্টআপেও গবেষকেরা ‘মেম্বার অব টেকনিক্যাল স্টাফ’ হিসেবে তালিকাভুক্ত, যা তাদের অহংমুক্ত ও সমতাপূর্ণ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করে।
বড় করপোরেট কাঠামোতে নয়, নতুন আইডিয়া অনুসরণের সুযোগ এবং গবেষক হিসেবে নিজের নেতৃত্ব দেখানোর পরিবেশই মিরার গবেষকদের প্রলুব্ধ করেছে।
এদিকে ছোট স্টার্টআপে কাজ করার স্বাধীনতা, নতুন গবেষণার সুযোগ এবং নিজের নেতৃত্ব প্রদর্শনের সুযোগের জন্য মিরা অন্য কোনো বড় করপোরেট কোম্পানিতে যুক্ত হতে চাননি। বড় কোম্পানিতে যুক্ত হলে এই স্বাধীনতা সীমিত হতো।
মিরার নেতৃত্বে তার দল নেতৃত্ব ও সহকর্মীর প্রতি গভীর আনুগত্য প্রদর্শন করেছে। তার বিনয়ী আচরণ এবং মানসিক বুদ্ধিমত্তা গবেষকদের অনুপ্রাণিত করেছে, যা আর্থিক প্রস্তাবের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী।
সিলিকন ভ্যালিতে নয় অঙ্কের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা বিরল ঘটনা। তবে মিরা ও তার দলের জন্য মূল উদ্দেশ্য, নৈতিক অঙ্গীকার এবং প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতি অর্থের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এ ঘটনা গবেষণায় প্রেরণা শুধু অর্থ নয়, প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য এবং নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেও আসে।
সান ফ্রান্সিসকোভিত্তিক মিরা মুরাতি স্টার্টআপটির এখনো কোনো পণ্য বাজারে আসেনি। বাজারে পণ্য না এলেও প্রযুক্তি বিশ্বের নজর স্টার্টআপটির দিকে। কারণ, এই এআই স্টার্টআপ জটিল রোগ, জলবায়ু পরিবর্তন বা সমাজের বৈষম্য মোকাবিলায় সাহায্য করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এসব সম্ভাবনার জন্য স্টার্টআপটির মূল্যায়ন দাঁড়িয়েছে ১২ বিলিয়ন ডলারে।
কোম্পানিটির মূল লক্ষ্য এমন একটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করা, যেটা সাধারণ মানুষ সহজে ব্যবহার করতে পারবে। এই স্টার্টআপের পেছনে বড় প্রতিষ্ঠান, যেমন- এনভিডিয়া, এএমডি, সিসকো, সার্ভিস নাও এবং আলবেনিয়ার সরকারও আছে। ওপেনএআই, মেটা ও ফরাসি এআই প্রতিষ্ঠান মিস্ট্রাল থেকে গবেষক ও ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে স্টার্টআপটি গড়ে উঠেছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ