ঢাকা, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

৩১ আষাঢ় ১৪৩২, ২০ মুহররম ১৪৪৭

মিল্কিওয়ে বিশাল শূন্য গহ্বরে, সম্প্রসারিত হচ্ছে মহাবিশ্ব

ডেস্ক রিপোর্ট

প্রকাশ: ১৩:৩১, ১৩ জুলাই ২০২৫

মিল্কিওয়ে বিশাল শূন্য গহ্বরে, সম্প্রসারিত হচ্ছে মহাবিশ্ব

ছবি: সংগৃহীত

মহাবিশ্ব দ্রুততার সঙ্গে সম্প্রসারিত হচ্ছে এবং আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি একটি বিশাল, রহস্যময় শূন্য গহ্বরে আটকে আছে— সম্প্রতি এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

বহু বছর ধরে মহাকাশ ও মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনে গবেষণা চালিয়ে আসা বিজ্ঞানীরা এবার একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ সামনে এনেছেন। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, বিগ ব্যাং–পরবর্তী প্রাথমিক সময়ের তুলনায় এখন মহাবিশ্ব প্রায় ১০ শতাংশ বেশি গতিতে সম্প্রসারিত হচ্ছে।

এই ব্যতিক্রমী পর্যবেক্ষণকে বলা হচ্ছে ‘হাবল টেনশন’, যা ‘হাবল ধ্রুবক’ নামক পরিমাপক ধারণার সঙ্গে সম্পর্কিত। এই ধ্রুবক ব্যবহার করে ছায়াপথ ও অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তু কত দ্রুত পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, তার হিসাব করা হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির এক বৈঠকে উপস্থাপিত এ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা আরো দাবি করেছেন, আমাদের অবস্থান মহাবিশ্বের একটি কম ঘনত্ববিশিষ্ট, বিশাল শূন্য অঞ্চলের ভেতরে। আর এই অঞ্চলে পদার্থ সাধারণভাবে ছড়িয়ে নেই— যা প্রচলিত তত্ত্বের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।

যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ড. ইন্দ্রনীল বণিক জানান, আজকের সম্প্রসারণ হার প্রত্যাশার চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি। এটি একটি গুরুতর সমস্যা, কারণ বর্তমান হার কোনো প্রচলিত মহাজাগতিক মডেল দ্বারা ব্যাখ্যা করা যাচ্ছে না।

গবেষকরা বলছেন, সমগ্র মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি মহাবিশ্বের অন্যান্য এলাকার তুলনায় ২০ শতাংশ কম ঘনত্বের অঞ্চলে রয়েছে। এই শূন্য গহ্বরের মধ্য দিয়ে পদার্থ প্রান্তের দিকে মহাকর্ষীয় টানে সরে যাচ্ছে, যার ফলে পৃথিবীর আশপাশের অঞ্চল থেকে মহাবিশ্ব বেশি দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

নতুন গবেষণায় ‘বিগ ব্যাংয়ের শব্দ’ (Sound of the Big Bang) নামের এক তত্ত্বকে সমর্থন দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, আমরা একটি বিশাল শূন্য অঞ্চলের মধ্যে অবস্থান করছি— এমন সম্ভাবনা সাধারণ ধারণার চেয়ে ‘১০ কোটিগুণ বেশি’।

বিজ্ঞানীদের ভাষ্যমতে, এই শূন্য গহ্বর প্রায় ‘একশ কোটি আলোকবর্ষ’ পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে এবং এটি মহাবিশ্বের সম্প্রসারণকে পৃথিবীর দৃষ্টিকোণ থেকে তুলনামূলকভাবে দ্রুততর করে তুলছে।

এই তথ্য নতুন করে প্রশ্ন তুলছে মহাবিশ্বের গঠন ও বিবর্তন সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলো নিয়ে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাবিশ্বের এই অপ্রত্যাশিত আচরণ বোঝার জন্য আরো গবেষণা প্রয়োজন।

ঢাকা এক্সপ্রেস/এফএন/আরইউ

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন