ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

১৯ আষাঢ় ১৪৩২, ০৭ মুহররম ১৪৪৭

শিরোনাম

Scroll
ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার হত্যা মামলার রায় আজ
Scroll
বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের কমান্ডারসহ দুই সদস্য নিহত
Scroll
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
Scroll
চট্টগ্রামের পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে
Scroll
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে আরো ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
Scroll
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা
Scroll
পদত্যাগপত্র জমা দিলেন শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা পরিচালক চিত্রশিল্পী ও শিল্প সমালোচক মোস্তফা জামান
Scroll
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ৬৫ যাত্রী নিয়ে ফেরিডুবি, নিখোঁজ ৪৩

‘এনএসআই-ডিজিএফআইয়ের নিয়ন্ত্রণে দিনের ভোট রাতে হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০:০১, ৩ জুলাই ২০২৫

‘এনএসআই-ডিজিএফআইয়ের নিয়ন্ত্রণে দিনের ভোট রাতে হয়েছে’

ছবি: সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণ হয়েছিল ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর। নির্বাচনের পরপরই দিনের ভোট রাতে করার বিষয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা হয়। প্রায় সাত বছর পর নির্বাচনের সেই অনিয়মের বিষয়ে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। জবানবন্দিতে তার এই বক্তব্য সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগের সরাসরি হস্তক্ষেপে দিনের ভোট রাতে করাসহ নানা অনিয়ম হয়েছে। তখন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পুরো নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে তিনি পরে বুঝতে পারেন।

সাবেক সিইসি নূরুল হুদা মঙ্গলবার (১ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি রেকর্ড করেন সিএমএম আদালতের অ্যাডিশনাল সিএমএম মো. জিয়াদুর রহমান।

দিনের ভোট রাতে করার অভিযোগে বিএনপির এক নেতার করা রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার মামলায় গত ২২ জুন গ্রেপ্তার হন নূরুল হুদা। গ্রেপ্তারের পরদিন তিনি আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতকে বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। সেই বিতর্কের দায় নির্বাচন কমিশনের নয়। এরপর দুই দফায় তাকে আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।

নূরুল হুদা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, দলের নেতা-কর্মী, নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী, পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন।

জবানবন্দিতে সাবেক সিইসি বলেন, আমি মনে করি, তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পনা করে প্রশাসন ও পুলিশের কিছু অসৎ কর্মকর্তার যোগসাজশে ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি করে দিনের ভোট রাতে গ্রহণ করেছে এবং অস্বাভাবিকভাবে কোনো কোনো নির্বাচনী এলাকায় শতভাগ ভোট গ্রহণ দেখানো হয়েছে, যা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

সাবেক সিইসি ২০১৮ সালের ভোটের অস্বাভাবিক ফলাফলের তথ্যও উল্লেখ করেছেন জবানবন্দিতে। তিনি বলেন, নির্বাচনের পর আমি রেজাল্ট শিট দেখে জানতে পারি যে অনেক কেন্দ্রে ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ ভোট পড়ে; যা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়নি। আরো শুনেছি যে অনেক কেন্দ্রে রাতে ব্যালট বাক্সে ব্যালট পেপার ভর্তি করা হয়। রাতেই ভোট দেওয়া হয়ে যায়।

এই কাজে কারা জড়িত ছিলেন, সেটিও জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন নূরুল হুদা। তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রভাবে তাদের কর্মী বাহিনী, দায়িত্বে থাকা পুলিশ, রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এই কাণ্ড ঘটেছে বলে আমি মনে করি। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এ ঘটনার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী। আমি বিশ্বাস করি, আমি বা আমার কমিশনের লোকদের অন্ধকারে রেখে এই অরাজক পরিস্থিতি ও ভোটের অনিয়ম করা হয়েছিল।

প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর (ডিজিএফআই) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তৎকালীন কর্মকর্তাদের ভূমিকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন নূরুল হুদা। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, ‘তৎকালীন গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই এবং ডিজিএফআইয়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পুরো নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল বলে আমি পরে বুঝতে পারি। নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে আমি বিশ্বাস করি যে নির্বাচনে কারচুপি ও অনিয়ম হয়েছে। দিনের ভোট রাতে হয়েছে। অস্বাভাবিকভাবে কোনো কোনো নির্বাচনী এলাকায় ভোট গ্রহণ হয়েছে; যা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ

আরও পড়ুন