শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:৫৮, ১৭ জুন ২০২৫
উদাহরণস্বরূপ, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার ওপর চালানো এক অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘অ্যারো অব বাশান’। ‘বাশান’ হলো বাইবেলীয় একটি অঞ্চল, যা ওল্ড টেস্টামেন্টে উল্লেখ রয়েছে এবং যেখানে ইসরায়েলিরা পুরাতন কালে বিজয় লাভ করেছিল।
গাজা উপত্যকায় সামরিক হামলার ক্ষেত্রেও ইসরায়েল হিব্রু বাইবেলের গল্প ও প্রতীক ব্যবহার করে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু অন্তত তিনবার গাজায় আক্রমণের জন্য ‘আমালেক’ কাহিনি উল্লেখ করেছেন। ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর নেতানিয়াহু ‘বুক অব ডিউটেরনমি’ থেকে একটি উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন,
“আমালেক তোমার সঙ্গে যা করেছিল তা মনে রেখো, আমরা মনে রাখি এবং আমরা যুদ্ধ করি।”
বাইবেলের এই অংশটি আমালেকীয়দের সম্পূর্ণ ধ্বংসের আহ্বান হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে গাজার ওপর পূর্ণাঙ্গ হামলার নৈতিক ভিত্তি হিসেবে দেখা হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচনার মুখে পড়েছে।
অন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) দক্ষিণ আফ্রিকার গণহত্যা মামলায় নেতানিয়াহুর এই ধর্মীয় উদ্ধৃতিকে গাজার জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যার প্ররোচনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একই কাহিনি ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর নেতানিয়াহু সেনাদের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতেও পুনরাবৃত্তি করেন।
ধর্মীয় নামকরণ কেবল সামরিক অভিযানে নয়, ইসরায়েলের আধুনিক সামরিক প্রযুক্তিতেও বিদ্যমান। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর বোমাবর্ষণ ব্যবস্থার নাম ‘ল্যাভেন্ডার’ ও ‘দ্য গসপেল’ — যা উভয়ই হিব্রু বাইবেলের ধর্মগ্রন্থে উল্লেখিত।
অন্যদিকে, ‘স্যামসন’ নামের রিমোট কন্ট্রোলড অস্ত্র, ‘জেরিকো’ ব্যালিস্টিক মিসাইল এবং ‘ডেভিড’স স্লিং’ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার নামও ধর্মীয় ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে রাখা হয়েছে। ‘জেরিকো’ শহরটি বাইবেলের ‘বুক অব যশুয়া’ অনুযায়ী ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে দখল নেওয়া হয়েছিল এবং ‘ডেভিড’স স্লিং’ হলো বাইবেলের মেষপালক ডেভিড ও গোলিয়াথের মধ্যকার বিখ্যাত যুদ্ধের স্মরণে নামকরণ।
টিআরটি ওয়ার্ল্ডের বিশ্লেষক রাভালে মহিদিন এবং হার্ভার্ডের গবেষকরা মনে করেন, এই ধর্মীয় অনুপ্রেরণার নামকরণ কৌশল ইসরায়েলের সামরিক কার্যক্রমকে ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক বৈধতা দেওয়ার এক অংশ। তবে এই বিষয়টি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ