শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:০১, ১৮ জুন ২০২৫
ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের ক্যাবিনেট কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে। ট্রাম্পের সরকারি সময়সূচিতে এই বৈঠক অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ও দক্ষিণ এশিয়ায় পারমাণবিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সফর ও বৈঠক এক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত বার্তা বহন করছে।
সফরটি ইসলামাবাদে একধরনের কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, চলতি মাসের শুরুতে ভারতের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তখন পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এমন উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগের অভাব নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল। এবার সেনাপ্রধান মুনিরকে হোয়াইট হাউস থেকে আমন্ত্রণ জানানোয় সেই সমালোচনার পাল্টা জবাব দেওয়া হলো বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এই সফরে যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মধ্যে ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা জানান, পাকিস্তান এই অভিযানে ‘অসাধারণ অংশীদার’। বিশেষ করে আফগান সীমান্ত এলাকায় পরিচালিত একাধিক সফল অভিযানের প্রশংসা করেন তিনি।
জেনারেল কুরিলা জানান, পাকিস্তানের অভিযানে আইএস-কের বহু সদস্য নিহত ও গুরুত্বপূর্ণ নেতারা আটক হয়েছেন। কাবুলের অ্যাবি গেট বিস্ফোরণের অন্যতম পরিকল্পনাকারী মোহাম্মদ শরিফুল্লাহকে আটক করে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর বিষয়েও মুনির সরাসরি ভূমিকা রাখেন।
ওয়াশিংটনের জর্জটাউন এলাকার ফোর সিজনস হোটেলে প্রবাসী পাকিস্তানিদের সঙ্গে এক সংলাপে আসিম মুনির বলেন, “আমরা চাই ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ এখনই থেমে যাক।” একই সঙ্গে তিনি ইরানকে সমর্থনের কথা জানিয়ে বলেন, ইসলামাবাদ শান্তিপূর্ণ সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগকে স্বাগত জানায়।
সেখানে প্রবাসীদের ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি মুনিরের উদ্দেশে স্লোগান দেন অনেকে। তবে হোটেলের বাইরে ছিল পাকিস্তানের বিরোধী দল পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। তাঁরা দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও বন্দী নেতাদের মুক্তির দাবি জানান।
সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান আকাশসীমা উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে মুনির বলেন, “ভারত একটি বিপজ্জনক ‘নতুন স্বাভাবিকতা’ গড়তে চাইছে। কিন্তু পাকিস্তান কখনো তা মেনে নেবে না—প্রয়োজনে শহীদ হতেও প্রস্তুত।”
তিনি পেহেলগাম হামলার পেছনে পাকিস্তানকে দায়ী করার ভারতীয় প্রচারকে ‘আগ্রাসনের অজুহাত’ বলে অভিহিত করেন এবং শান্তিপূর্ণ আলোচনা শুরু করতে ভারতকে আহ্বান জানান।
প্রবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় সেনাপ্রধান দেশীয় রাজনীতি নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেন। একজন প্রবাসী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ‘সফটওয়্যার আপডেট’ নিয়ে রসিকতা করলে তিনি জবাবে বলেন, “গণতান্ত্রিক সমাজে মতপ্রকাশের অধিকার সুরক্ষিত থাকা উচিত।”
তিনি আরও বলেন, প্রবাসীদের অবদান দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মেধা পাচার নয়, বরং একে তিনি ‘মেধা অর্জন’ বলে আখ্যা দেন।
ঢাকা এক্সপ্রেস/ এমআরএইচ