শিরোনাম
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৪৫, ১৮ জুন ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
আর নেতানিয়াহুর এ কথার বিপরীতে খামেনি বলেছেন, ইরান কখনোই জায়নবাদীদের (ইসরায়েল) সঙ্গে আপস করবে না। তিনি বলেন, মর্যাদাপূর্ণ হায়দারের নামে, যুদ্ধ শুরু হলো। হজরত আলীর (রা.) আরেক নাম হায়দার— তিনি ইসলামের চতুর্থ খলিফা এবং শিয়া মুসলমানদের কাছে বিশেষভাবে সম্মানিত। মহানবী হজরত মুহাম্মদের সা.) চাচাতো ভাই ও মেয়ের জামাই হজরত আলী (রা.)।
এখন প্রশ্ন আসছে ট্রাম্পের দৃষ্টিতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির সমাধানে বাধা খামেনি। প্রশ্ন আসে কে এই খামেনি?
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি হলেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি। গত প্রায় চার দশক ধরে তিনি ইরানকে শাসন করে আসছেন। এ সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি এগিয়ে নিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধ ও আন্দোলন দমন করেছেন।
সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে খামেনি ইরানের সরকার, বিচার বিভাগ, সামরিক বাহিনী, ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী এবং কুদস ফোর্স–এর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখেন। এই কুদস ফোর্সই হামাস, হেজবুল্লাহ এবং হুথি বিদ্রোহীদের মতো প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে।
খামেনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩৯ সালে ইরানের পবিত্র নগরী মাশহাদে। একজন ইরানি, শিয়া মুসলিম ধর্মগুরু খামেনি ১৯৮৯ সাল থেকে ইরানের দ্বিতীয় ও বর্তমান সর্বোচ্চ নেতা। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইরানের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। তিনি ছিলেন আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি’র শিষ্য; যিনি ১৯৭৯ সালের ইরান বিপ্লবের মাধ্যমে দেশটির প্রো-ওয়েস্ট রাজতন্ত্রকে উচ্ছেদ করেন ও ইসলামি প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন।
খামেনি ‘সৈয়দ’ খেতাব ধারণ করেন যা সরাসরি বংশানুক্রমে হজরত আলী (রা.) হতে পাওয়া। খামেনির পূর্বপুরুষদের বেশিরভাগই বর্তমান ইরানের তাফরেজ থেকে আগত এবং তারা দেশান্তরিত হয়ে তাবরিজ শহরে বসবাস শুরু করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ জওয়াদ খামেনেয়ী এবং মাতার নাম খাদিজা মিরদামাদী। মা-বাবার আট সন্তানের মধ্যে খামেনি দ্বিতীয়, এর মধ্যে তার দুই ভাই-ই ধর্মগুরু। তার ছোট ভাই হাদী খামেনি একটি ইরানি সংবাদপত্রের সম্পাদক ও ধর্মগুরু।
১৯৮১ সালে খামেনি একটি হামলার শিকার হন, যাতে তার ডান হাত স্থায়ীভাবে বিকল হয়ে যায়। খোমেনির মৃত্যুর পর ১৯৮৯ সালে; তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
সর্বোচ্চ নেতা হওয়ার পর থেকে খামেনি ইরানের সীমান্ত ছাড়িয়ে আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারে মনোযোগ দেন। অ্যাক্সিস অব রেজিস্ট্যান্স নামে পরিচিত একাধিক মিত্র গোষ্ঠী গড়ে তোলেন যা লেবানন থেকে ইয়েমেন পর্যন্ত বিস্তৃত।
এই দীর্ঘ সময় ইরান সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও, সব কিছু বদলে যায় যখন ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়।
এর পর গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ, হিজবুল্লাহর ওপর আক্রমণ এবং ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও শীর্ষ সামরিক নেতাদের ওপর ইসরায়েলের বিমান হামলা ইরানের অজেয় ভাবমূর্তি ভেঙে দেয়।
ঢাকা এক্সপ্রেস/আরইউ